
নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চরে কনটেইনার টার্মিনালে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
বিডা চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের দেশে বার্ষিক এফডিআই (FDI) ৭০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি নয়। একটি প্রকল্প থেকে যদি ৮০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আসে, তবে তা দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।” তিনি আরও জানান, বিডা এই প্রকল্পের অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
প্রকল্পের গুরুত্ব
লালদিয়া চরের কনটেইনার টার্মিনালে এই বিশাল বিনিয়োগের ফলে চট্টগ্রাম হবে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, “চট্টগ্রাম হবে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতির মূল কেন্দ্র। এখানে বিনিয়োগের মাধ্যমে কেবল কর্মসংস্থানই সৃষ্টি হবে না, বরং এটি দেশের সামগ্রিক বন্দর ব্যবস্থার উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের মানুষের জন্য, বিশেষ করে চট্টগ্রামের জন্য নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করা। অর্থনৈতিক উন্নয়ন একটি সরকারের প্রথম এজেন্ডা হওয়া উচিত এবং এর জন্য বিশ্বের মানসম্পন্ন টার্মিনাল নির্মাণ করা প্রয়োজন।”
বিনিয়োগের বিশেষত্ব
লালদিয়া চরে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আসবে, এবং এই প্রকল্পে বাংলাদেশের কোনো সরাসরি বিনিয়োগ থাকবে না। চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, “এটি বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ, এবং সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের বন্দরগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা।”
এতে সাহায্য করবে এপিএম টার্মিনালস, যা প্রথমবারের মতো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ও সরকার-থেকে-সরকার (জিটুজি) ভিত্তিতে বিওটি (বিল্ড-অপারেট-ট্রান্সফার) মডেলে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
এপিএম টার্মিনালস এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে এবং বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
উন্নয়ন পরিকল্পনা
বর্তমানে বাংলাদেশের পোর্ট ক্যাপাসিটি সীমিত হলেও, ভবিষ্যতে তা ছয় গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিডা চেয়ারম্যান বলেন, “পোর্টের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আমরা বিশ্বের শীর্ষ বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করার পরিকল্পনা নিয়েছি।”
এছাড়া, আনোয়ারা-এ একটি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সাম্প্রতিক অগ্রগতি
২০২৪ সালে এপিএম টার্মিনালস লালদিয়া টার্মিনালে কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা করেছিল, যেখানে প্রথম দিকে ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ছিল। তবে বর্তমানে প্রকল্পের বিনিয়োগ পরিমাণ বাড়িয়ে ৮০০ মিলিয়ন ডলার করা হয়েছে।