
নিজস্ব প্রতিবেদক: রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী ও কার্যকর সমাধান খুঁজতে বাংলাদেশ তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর প্রথমটি আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার সকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, কক্সবাজার সম্মেলনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে— ‘অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা।’
ড. খলিলুর রহমান জানান, জাতিসংঘের উদ্যোগে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে এবং ৬ ডিসেম্বর কাতারের দোহায় রোহিঙ্গা বিষয়ক আরও দুটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, একসময় রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে প্রায় হারিয়ে যাচ্ছিল। তবে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে গত বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এ নিয়ে নতুন বৈশ্বিক উদ্যোগ গৃহীত হয় এবং বিশ্বের ১০৬ দেশ এতে সমর্থন জানায়।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও বলেন, যেহেতু রোহিঙ্গারা জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র নয়, তাদের প্রত্যাশা ও অভিব্যক্তি বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরার দায়িত্ব বাংলাদেশ নিচ্ছে।
কক্সবাজারে ‘অংশীজন সংলাপ’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়ার আট বছর পূর্তিকে সামনে রেখে আগামী ২৫ আগস্ট উখিয়ার ইনানীতে হোটেল বে-ওয়াচে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে। এতে জাতিসংঘ ও কাতার সহ-আয়োজক থাকবে। সম্মেলনের উদ্দেশ্য রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল বৃদ্ধি এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে গতিশীল করা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা ইস্যুর গুরুত্ব ক্রমেই কমে আসছে। তহবিল সংকট বাড়ছে, এমনকি মিয়ানমারের সেনাদের বিরুদ্ধে আরোপিত কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘটনাও ঘটছে। ফলে সংকট সমাধান আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠক
এরই মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের (এনটিএফ) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম। এতে জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি অংশ নেন।
বৈঠক শেষে মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান জানান, এ বছর যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনা (জিআরপি) অনুযায়ী ৯৩ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার প্রয়োজন হলেও এখন পর্যন্ত প্রতিশ্রুতি এসেছে মাত্র ৪৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারের। অর্থ সংকটের কারণে খাদ্য, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়বে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
তিনি জানান, কক্সবাজার সম্মেলন তিন দিনব্যাপী হবে। ২৪ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা, ২৫ আগস্ট মূল অনুষ্ঠান এবং ২৬ আগস্ট রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন অতিথিরা। দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্তত নয়টি দেশের মন্ত্রী এতে দাওয়াত পেয়েছেন।