অনলাইন ডেস্ক: রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার নতুন সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সহায়তা রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণসহ জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে যে তারা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলারের নতুন আর্থিক সহায়তা দেবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ দেয়া এক পোস্টে জানিয়েছেন, ‘ডাব্লিউএফপি এর মাধ্যমে এই খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা দশ লাখেরও বেশি মানুষকে দেয়া হবে। এই সহায়তা প্যাকেজটি মূলত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য এবং আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা, যেমন জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সহায়ক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার এই উদ্যোগ রোহিঙ্গা জনগণের জন্য মানবিক সহায়তার একটি বড় অংশ হিসেবে কাজ করবে।'
এই সহায়তার মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার পাশাপাশি তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রতিবেশী মিয়ানমারের সামরিক অভিযানের মুখে পালিয়ে আসা ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার জেলার শিবিরে আশ্রয় দিচ্ছে বাংলাদেশ। গত বছর মিয়ানমার থেকে প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছিল।
শরণার্থী শিবিরগুলোর তত্ত্বাবধানকারী বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় জানিয়েছে, খাদ্য রেশন শরণার্থীদের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টি বজায় রাখতে সহায়তা করবে। এক বিবৃতিতে কার্যালয় বলেছে, ‘আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রয়োজনীয় তহবিল সরবরাহের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে এই জীবন রক্ষাকারী কর্মসূচিগুলো দীর্ঘমেয়াদে টিকিয়ে রাখা যায়।’
তবে কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য খাদ্য সহায়তা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। তবে তহবিলের ঘাটতির কারণে রেশন কিছুটা কমানো হয়েছে। সংশোধিত ব্যবস্থার অধীনে, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তবর্তী জেলা কক্সবাজারে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী বসতিতে প্রত্যেক শরণার্থী প্রতি মাসে ১২ ডলার পাবেন। আগে তাদের বরাদ্দ ছিল ১২ দশমিক ৫০ ডলার।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, কক্সবাজারে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক ১২ ডলার ও ভাসানচরে অবস্থানরতদের জন্য ১৩ ডলার বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুতে ডব্লিউএফপি সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছিল, জরুরি আর্থিক সহায়তার ঘাটতির কারণে এপ্রিল মাসে খাদ্য রেশন অর্ধেক করে জনপ্রতি মাত্র ৬ ডলার করতে তারা বাধ্য হতে পারে। ২০২৩ সালেও একই রকম হ্রাস করা হয়েছিল। ওই সময় খাদ্য রেশন জনপ্রতি ৮ ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছিল। অপুষ্টির তীব্র বৃদ্ধি ঘটায় পরে তা আবার বাড়িয়ে ১২ দশমিক ৫০ ডলারে ফিরিয়ে আনা হয়।
ডব্লিউএফপির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা ‘দাতাদের কাছ থেকে সময়োপযোগী অনুদানের মাধ্যমে’ তহবিলের ঘাটতি পূরণ করেছে। তবে তিনি এর বিশদ জানাননি।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.