নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় সরকারি রাস্তার ধারে অবৈধ ভাবে গাছ কর্তনে বাধা দেওয়ার জেরে সাংবাদিক তন্ময় দেবনাথ কে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন ও মারধরের পরে রাস্তার ফেলে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ২১ শে ফেব্রুয়ারি রাত্রি আনুমানিক ১১ টার দিকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় উপজেলার আড়ানী পৌরসভাধীন বড়াল নদীর শ্মশান ঘাটের পার্শ থেকে সাংবাদিক তন্ময় কে উদ্ধার করে স্থানীয়রা চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সাংবাদিক তন্ময় দেবনাথ জাতীয় দৈনিক স্বাধীন দেশ পত্রিকার রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি ও বাঘা রিপোটার্স ক্লাবের সদস্য।
এ ঘটনায় সাংবাদিক তন্ময় দেবনাথ বাদী হয়ে ঘটনার সাথে সরাসরী জড়িত ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত কয়েক জনের বিরুদ্ধে বাঘা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
সাংবাদিক তন্ময় সূত্রে, রাত্রি আনুমানিক সাড়ে ৯ টার দিকে আড়ানী বাজার থেকে নিজ বাড়িতে ( যোতরঘু) ফিরছিলো সাংবাদিক তন্ময়। আড়ানী পৌরসভা ২নং ওয়ার্ড যোতরঘু গ্রামের মৃত হজরতের ছেলে ইসলাম তাকে দাঁড় করিয়ে কথা বলা শুরু করে এবং কথ বলার এক পর্যায়ে পরিকল্পিত ভাবে রাশিদুল ,ইমদাদুল , নান্টু ও রায়হান ঘটনার স্থানে চলে আসে। তন্ময় কিছু বুঝে উঠার আগেই একই গ্রামের মৃত ইসতাহিন এর ছেলে রাশিদুল তার মুখ চেপে ধরে (যাতে চিৎকার করতে না পারে) এরপর অন্যরা সবাই মিলে জোরপূর্বক তন্ময়ের শরীরের জ্যাকেট খুলে নেয় এবং সেই জ্যাকেট ছিড়ে তাকে পিচমোরা দিয়ে দুই হাত ও পা দুইটা বেধে মুখের মধ্যে মাথায় থাকা টুপি ঢুকিয়ে দেয়। এরপর রাস্তার পাশে খাদের জঙ্গলে নিয়ে বুকে-পিঠে সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে এবং অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ পর রাস্তার উপরে থাকা নাম না জানা আরও কয়েকজন তাদেরকে রাস্তায় পথচারীর উপস্থিতির কথা জানালে তারা তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যাই। সাংবাদিক তন্ময়ও নির্যাতন ও মারপিটের কারণে অচেতন হয়ে পরে।
তন্ময় দেবনাথ আরও বলেন, আমি পেশায় একজন সাংবাদিক। গত ৯ ফেব্রুয়ারির আমাদের বাড়ির পাশের রাস্তার সরকারি একটি গাছ কাটতে দেখি ইমদাদুলকে। আমি ইমদাদুল কে বলি গাছটি সরকারি আপনি কাটছেন কেন। এই কথা শুনে সে আমাকে মারার জন্য তেরে আসে। এরপর এ বিষয়ে বন বিভাগ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। এছাড়াও সে আগে থেকেই বিভিন্ন ভাবে আমাকে মারার জন্য ভয়ভীতি দেখায়তো। শেষ মেষ তারা আমাকে মেরেই ফেলতে লেগেছিল। আমি আমার উপর করা এই নির্মম নির্যাতনের সুষ্ঠ বিচার চাই।'
এই ঘটনায় পথচারী সান্টু আলী জানান, আমি দোকান বন্ধ করে বাসায় যাওয়ার সময় লোকজনের হট্টগোল দেখে দাঁড়িয়ে পরি এবং দেখি সাংবাদিক তন্ময় দেবনাথ হাত-পা বাধা অবস্থায় উপুর হয়ে মাটিতে পড়ে রয়েছে। আমরা তখন তার হাত-পায়ের বাঁধন কেটে তাকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করি।
এদিকে সাংবাদিক নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে ঘটনার তদন্ত ও সাংবাদিকের নিরাপত্তা দাবি করেছেন বাঘা রিপোটার্স ক্লাবের সদস্যরা।
বাঘা রিপোটার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইসলাম দিলদার জানিয়েছেন, যারা তন্ময় দেবনাথ কে নির্মম ভাবে নির্যাতন করেছে অবিলম্বে এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইমগত ভাবে শাস্তি দাবি জানান।
এ বিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি') আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে খুব দ্রুত আইনিপদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.