রাজনৈতিক পদ-পদবির কারণে আমার ছেলেটাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে-অভিযোগ পিতার

জেমস আব্দুর রহিম রানা: রাজনৈতিক পদ-পদবি কারণে আমার ছেলেটাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নিহত যুবলীগ নেতার পিতা সাহাবুল ইসলাম। আজ সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের সাথে কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি এ মন্তব্য করেন।

কাঁদতে কাঁদতে নিহত মুরাদের ভাই বিএম ফরহাদ বলেন-আমি ঘরে ভাত খাচ্ছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে বাড়ির বাইরে রাস্তায় বের হয়ে দেখি আমার ভাইয়ের হাত কেটে ফেলেছে, পা কেটে ফেলেছে, পেটে কুপিয়ে নাড়িভুড়ি বের করে ফেলে রেখে চলে গেছে।

তিনি আরও বলেন, আমার ভাই রবিন অধিকারী বেচার সঙ্গে চলাফেরা করতো। তাছাড়া যুবলীগের পদ-পদবী নিয়ে এলাকার কিছু সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। আমার ভাই নওয়াপাড়া বন্দরের একটি ঘাটের সরদার। ওর উপর এর আগেও দুইবার হামলা হয়েছে। এলাকার কিছু সন্ত্রাসীরা কিছুদিন আগে প্রকাশ্যে ওকে হত্যা করার হুমকিও দেয়। অনেকদিন ধরে আমার ভাইয়ের ক্ষতি করার জন্য চেষ্টা করছিল, শেষমেশ গতকাল রাত ১০টার দিকে মুরাদ বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিল। এমন সময় রাস্তায় আমার ভাইকে একা পেয়ে এলাকার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।

আজ সোমবার সকালে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে বসে বুকফাটা আহাজারি করছেন নিহত যুবলীগ নেতা মুরাদ হোসেনের বড় বোন লিলিমা বেগম। পাশেই বসে অঝরে কাঁদছিলেন নিহতের বাবা বৃদ্ধ সাহাবুল ইসলাম। দাদার কোলে বসে নির্বাক হয়ে মায়ের কান্নাঝরা মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে মুরাদ হোসেনের তিন মাস বয়সী শিশু। তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া বড় ছেলেও মায়ের বুকে মাথা দিয়ে কেঁদেই যাচ্ছে। গোটা এলাকা জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

নিহতের বড় বোন লিলিমা বেগম বলেন, আমার ভাই অ্যাম্বুলেন্সেই মরার আগে সবার নাম বলে গেছে। কারা কারা ওরে মেরেছে সবকিছু বলে গেছে। ওরা চৌদ্দ জন মিলে আমার ভাইকে মেরেছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।

তিনি বলেন, মুরদাকে এখান থেকে আহত অবস্থা প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে খুলনায় নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই তিনি মারা যান।

নিহতের বাবা সাহাবুল ইসলান বলেন, রাজনৈতিক পদ-পদবি কারণে আমার ছেলেটাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো। আমার ছেলে কাছে এই এলাকার কেউ বিপদে পড়ে এসে কোনোদিন ফিরে যায়নি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিকুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত মরদেহ খুলনায় রয়েছে। ময়নাতদন্ত হওয়ার পর মরদেহ আসবে। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ বা মামলা করা হয়নি। আমাদের তদন্ত চলছে।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১০টার দিকে অভয়নগরের সরদারপাড়ায় নিজের বাড়ি থেকে দেড়শ গজ দূরে রাস্তায় নির্মমভাবে যুবলীগ নেতা মুরদা হোসেনকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মুরাদ হোসেন ওই এলাকার সাহাবুল ইসলামের ছেলে। তিনি নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।

 

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

দুই দশক পালিয়েও শেষ রক্ষা পায়নি ‘আজরাইল’

নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার আলোচিত সিরিয়ার কিলার মো. লোকমান ওরফে আজরাইলকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। দুই দশক পলাতক থাকার পর বুধবার ভোরে বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়া দ্বীপের

মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন তিনগুণ বাড়াল ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন তিনগুণ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার। একই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে সংখ্যালঘু তহবিলে অর্থের পরিমাণও। শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের

‘আগে স্থানীয় নির্বাচন, পরে জাতীয়’

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকেই বলে আসছে আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত।

হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুর, আহত ১১

নিজস্ব প্রতিবেদক: মগবাজারে বেসরকারি ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। এতে ১১ জন কর্মচারী গুরুতর আহত হয়েছেন। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে

দলবাজ ছাত্র-শিক্ষকদের ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না: প্রধান উপদেষ্টাকে শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনৈতিক দলীয় ট্যাগধারী ছাত্র এবং শিক্ষককে ক্যাম্পাসে দেখতে চান না বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর’)

বাঁশখালী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে জোড়া খুনের প্রধান আসামী কালু গ্রেফতার 

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে (এসএস পাওয়ারপ্লান্ট) আলোচিত জোড়া খুনের প্রধান আসামী হামিদুর রহমান প্রকাশ কালু (২২) কে গ্রেফতার করেছে