
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা নির্বাচন কমিশন (ইসি), রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য নানা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, সম্ভাব্য তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনি কার্যক্রম রমজান মাসের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় পঞ্জিকা অনুযায়ী, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি রমজান শুরু হতে পারে এবং ঈদুল ফিতর হতে পারে ২০ মার্চ। সে হিসেবে নির্বাচন এপ্রিলের শুরুতে হলে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। অর্থাৎ, রমজানের মধ্যেই মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই-বাছাই, প্রতীক বরাদ্দ, প্রচার-প্রচারণাসহ নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলো সম্পন্ন করতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, রোজার মধ্যে নির্বাচনি পরিবেশ সৃষ্টি, মাঠপর্যায়ে প্রচারণা ও জনসম্পৃক্ততা বজায় রাখা কঠিন হয়ে উঠবে। রমজান ও ঈদের পরপর ভোট হলে প্রার্থীরা প্রচারণায় চরমভাবে বিঘ্নিত হবেন বলে মনে করছেন অনেকে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে প্রচার চালাতে গিয়ে ব্যয় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড গরম ও বৈশাখের ঝড়বৃষ্টি প্রচারে আরও সমস্যা সৃষ্টি করবে।’ তিনি আরও জানান, দেশের অধিকাংশ জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা সময়োপযোগী ও গ্রহণযোগ্য।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জনগণের প্রত্যাশা প্রতিফলিত হয়নি। কেন ডিসেম্বর নয়, কেনই বা নির্বাচন এপ্রিলেই করতে হবে—এ বিষয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।’
ইসি সূত্রে জানা গেছে, অতীতে সংসদ নির্বাচনে ৪২ থেকে ৭৮ দিনের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। দ্বাদশ নির্বাচনেও ৪৫ থেকে ৫০ দিনের সময়সীমা ধরে তফসিল ঘোষণা হতে পারে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, আগামী সপ্তাহে কমিশনের একটি বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে সম্ভাব্য সংকট নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে, একই সময় এসএসসি পরীক্ষা থাকায় নির্বাচনি প্রচার ও উৎসবমুখর পরিবেশ শিক্ষার্থীদের জন্য বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অভিভাবক ও শিক্ষাবিদরা।
সব মিলিয়ে রমজানের আবহে নির্বাচনের তফসিল ও কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে ইসি ও রাজনৈতিক দলগুলোকে এখনই সুস্পষ্ট পরিকল্পনার দিকে এগোতে হবে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।