
আমিনুল হক,শাহজাদপুর প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ২০১৫ সালের ৮ মে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবিগুরুর নামে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।২০১৮ সালের ১৭ এপ্রিল ১০৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। তবে আজ পর্যন্ত স্থানীয় দুটি কলেজ ভবন এবং একটি ভাড়া ভবনে শিক্ষাকার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে। স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ না হলেও, নিয়োগ বাণিজ্য, তেল খরচে লুটপাট, বাজেটের নামে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটি বারবার বিতর্কিত হয়ে উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৮ বছর পার হলেও স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। বরং সাবেক দুই ভিসি ও রেজিস্ট্রারসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল এবং অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এ দিকে ভর্তি পরীক্ষার নামে অর্থ লোপাট ২০২১-২২ থেকে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষার আয়োজনের জন্য অগ্রিম ৬০ লাখ ৮৪ হাজার টাকা নেওয়া হলেও আড়াই বছরেও কোনো সমন্বয় বিল দাখিল করেনি কর্তৃপক্ষ। প্রচলিত আইনে দুই মাসের মধ্যে বিল দাখিলের নিয়ম থাকলেও তা লঙ্ঘন হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হওয়ায় তিন সদস্যের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান উপাচার্য।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার অর্থ নিয়ে বাংলা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে ।উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সুমন কান্তি বড়ুয়ার চিঠিতে তাকে অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ড. ফখরুল দাবি করেন, তিনি কোনো অতিরিক্ত অর্থ নেননি।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম হাসান তালুকদার স্বীকার করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে দুর্নীতি ও অনিয়মের ছাপ রয়েছে। এরই মধ্যে ১৫টিরও বেশি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখনো কোনো নির্দিষ্ট পদক্ষেপ বা বিচার কার্যক্রম শুরু হয়নি।
শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলন করছেন। শাহজাদপুরের স্থানীয় জনসাধারণও বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবির পাশাপাশি তারা প্রশাসনিক অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে, যা পুরো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। তদন্ত ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ।