
নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশের আইজিপি আল-মামুনের চাকরির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। আজ এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর আগেই থেকেই জানা ছিলো যে, পুলিশ প্রধানের মেয়াদ বাড়ছে। বাংলাদেশে পুলিশের আইজিপির মেয়াদ বৃদ্ধির ঘটনা শুধু বিরল নয়, ব্যতিক্রমও বটে। সাধারণত পুলিশ বাহিনীতে চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় না। তবে, চৌধুরী আল-মামুনের চাকরির মেয়াদ দু’বার বৃদ্ধি করা হলো। এর আগে নির্বাচনের আগে তার চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিলো দেড় বছর। এবার বাড়ানো হলো আরও এক বছর।’
পুলিশ প্রধান হিসেবে চৌধুরী আল-মামুন একটি পিওর সম্মান অর্জন করলেন। অতীতে দু’বার চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির ঘটনা ছিলো না। কেন সরকার চৌধুরী আল-মামুনকে পুলিশ প্রধান হিসেবে আবার পুলিশ প্রধান হিসেবে রাখলেন। সরকারি দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, একাধিক বাস্তবতা বিবেচনা করেই পুলিশ প্রধানের চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
বর্তমান পুলিশ প্রধান যদি এই মুহূর্তে অবসরে যেতেন তাহলে ১২তম ব্যাচের কোন কর্মকর্তাকে পুলিশ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হতো। ১২তম ব্যাচের প্রথম ব্যক্তি হলেন, কাউন্টার টেরোরিজমের রুহুল আমিন। যিনি অতিরিক্ত আইজিপির সম মর্যাদার দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) কামরুল হাসানের কথাও আলোচনায় ছিলো। কিন্তু চৌধুরী আল মামুনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বৃদ্ধির ফলে ১২তম ব্যাচের কেউই আর আইজিপি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। যদি না কোন নাটকীয় ঘটনা না ঘটে।’
পুলিশ প্রধান হিসেবে সরকার এই বিকল্পগুলোকে সুবিধাজনক মনে করেননি। বরং চৌধুরী আল-মামুনকে রাখাটাকেই এই মুহূর্তে সঠিক মনে করেছেন। এর ফলে ১২তম ব্যাচ থেকে পুলিশ প্রধান হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শেষ হয়ে গেল।
পরবর্তীতে পুলিশ প্রধান হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে থাকবেন, স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান মনিরুল ইসলাম। তিনি অতিরিক্ত আইজিপির মর্যাদায় রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, সরকার তাকে পরবর্তী পুলিশ প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিতে চান। একারণেই চৌধুরী আল-মামুনের মেয়াদ বাড়লো। পুলিশের মধ্যে এধরনের একটি আলোচনা রয়েছে।
তবে সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো ভিন্ন কারণের কথা বলছে। তারা শুধু কোন ব্যক্তিকে পুলিশ প্রধান করার জন্যই চৌধুরী আল-মামুনের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টিকে নাকচ করে দিচ্ছে। তারা মনে করছে, সাম্প্রতিককালে বেনজীরের ঘটনা এবং পুলিশের কিছু কিছু দুর্বৃত্তায়ন এবং দুর্নীতির ঘটনার প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
চৌধুরী আল-মামুন এমন একজন ব্যক্তিত্ব যার চাকরি জীবনে কোন কলঙ্ক নেয়। তিনি সৎ, মেধাবী এবং নিষ্ঠাবান একজন কর্মকর্তা হিসেবে পুরো চাকরি জীবনে প্রশংসিত হয়েছেন। এমনকি পুলিশ প্রধান হওয়ার পরও তার সততা নিয়ে কেউ কোন প্রশ্ন করেনি। একেবারে নিপাট ভদ্রলোক, দায়িত্বের প্রতি অবিচল এবং সততার প্রশ্নে আপোষহীন থাকার কারণে তার চাকরির মেয়াদ বাড়লো বলে সরকারের একাধিক সূত্রগুলো মনে করছে। বিশেষ করে যেসময় পুলিশের ইমেইজ সংকট তৈরি হয়েছে সেসময় তাকে আরও এক বছর রাখাটা জরুরি ছিলো। এই এক বছর পুলিশে তিনি শুদ্ধি অভিযান পরিচালনায় নেতৃত্ব দিবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এবং এই ধরনের অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে এধরনের লোকেরই প্রয়োজন বলে সরকার মনে করে। কারণ সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের সীমাহীন দুর্নীতির যেসমস্ত খবর যেভাবে বেরিয়েছে তাতে পুলিশ বাহিনীর ইমেইজে বড় ধরনের ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। আর সেই ক্ষত পুনরুদ্ধারের জন্য পুলিশ বাহিনীতে একটি সৎ ইমেইজ তৈরি করা জরুরি। আর সেজন্যই চৌধুরী আল-মামুনের চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হলো বলে সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো মনে করছে।’