
নিজস্ব প্রতিবেদক: চার দিনের সরকারি সফর শেষে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
এর আগে শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে তিনি হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
সফরের শুরুতে গত ৯ জুন সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা ত্যাগ করেন ড. ইউনূস। পরদিন সকাল ৭টা ৫ মিনিটে তিনি লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান।
সফরকালে তিনি ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে বাকিংহাম প্যালেসে একান্ত বৈঠক করেন এবং লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ গ্রহণ করেন।
সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা নিশ্চিত করা।
লন্ডনে অবস্থানকালে ড. ইউনূস বৈঠক করেন কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি আয়োরকর বচওয়ের সঙ্গে। তিনি বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক সংস্কারে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এছাড়া, এয়ারবাসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াউটার ভ্যান ওয়ার্শ, যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ও বোর্ড অব ট্রেডের প্রেসিডেন্ট জনাথন রেনল্ডস, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জনাথন পাওয়েল এবং ব্রিটিশ হাউস অব কমন্সের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েলসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত ‘অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আলাপচারিতা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তিনি। এছাড়া ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সর্বদলীয় এমপিদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সফরের শেষ দিনে লন্ডনে একটি হোটেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে সংস্কার কার্যক্রম ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অগ্রগতি সাপেক্ষে আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে নীতিগত ঐকমত্যে পৌঁছানোর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
এছাড়া লন্ডনে জরিপ জাহাজ এইচএমএস এন্টারপ্রাইজ সম্পর্কে অবহিত করতে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ব্রিটিশ নৌবাহিনীর অ্যাডমিরাল ডেপুটি জেরেমি চার্চার ও কমোডর হোয়্যালি। একই দিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক ইন্টারেক্টিভ অধিবেশনেও অংশ নেন তিনি।
চার দিনের সফরে ড. ইউনূসের কার্যক্রম ছিল বহুমাত্রিক ও কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যা ভবিষ্যতের নীতিনির্ধারণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।