
জেমস আব্দুর রহিম রানা: যশোর জেনারেল হাসপাতালে সংবাদ সংগ্রহকালে সময় টিভির প্রতিবেদক জুয়েল মৃধা ও চিত্র সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদের ওপর হামলা চালিয়েছে পুলিশ। এসময় পুলিশের দুই সদস্য ক্যামেরা ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়।
বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে যশোর জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সাংবাদিক নেতারা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এসময় পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের দুই সদস্যকে ক্লোজড করে নিয়ে যান এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
সময় টিভির যশোরের স্টাফ রিপোর্টার জুয়েল মৃধা জানান, বেনাপোল সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আহত দুই বাংলাদেশি নাগরিকের ছবি সংগ্রহ করতে হাসপাতালে যান তারা। এসময় আহত ওই দুই ব্যক্তির ছবি নিতে গেলে পুলিশ সদস্য হাফিজ ও রবিউল তাতে বাধা দেন। এমনকি চিত্র সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদকে গলা টিপে দেয়ালে ঠেসে ধরেন। ঠেকাতে গেলে তাকেও লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য সাংবাদিকদের গ্রেফতারেরও হুমকি দেন। এ খবর জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যান যশোরের সাংবাদিক নেতারা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এদিকে, সাংবাদিকদের ওপরে হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক নেতারা। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানান তারা।
সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামান বলেন, পুলিশের এহেন কর্মকাণ্ড স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। তিনি সাংবাদিক লাঞ্ছনাকারী দুই পুলিশ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ জামান বলেন, পুলিশের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের তীব্র নিন্দা ও আগামীতে এমন ঘটনা রোধে ওই দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশা করি।
বিএফইউজের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব নূর ইসলাম বলেন, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এমন ঘটনা স্বাধীন মত প্রকাশে বড় ধরনের বাধা। ওই দুই পুলিশ সদস্যের এমন শাস্তি হোক যেন আগামীতে এমন ঘটনা না ঘটে।
প্রেসক্লাব যশোরের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। এরপর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করা হয়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওই দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ করেছে। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখার অপেক্ষায় রয়েছি।
ঘটনার পর যশোর ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর রূপন কুমার সরকারসহ পুলিশ কর্মকর্তারা যশোর প্রেসক্লাবে যান। তারা জুয়েল মৃধা, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ও সাধারণ সম্পাদক এস এম তৌহিদুর রহমানসহ সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুঃখ প্রকাশ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।
এদিকে হামলার ঘটনায় নিন্দা ও জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের নেতারা।
অপর এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম বিএমএসএফের ট্রাস্টি বোড চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আহমেদ আবু জাফর ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য জেমস আব্দুর রহিম রানা এ ঘটনায় নিন্দা ও জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।