
অনলাইন ডেস্ক: মোদি সরকার বাংলাদেশি পণ্য ভারতে ঢুকতে নানারকম বিধিনিষেধ আরোপ করলেও কলকাতা ও মুর্শিদাবাদের দোকানগুলো বাংলাদেশি পণ্যে সয়লাব। বিস্কুট, চানাচুর, সাবান, তেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রধান ভরসা এখন বাংলাদেশি পণ্য। এছাড়া পোশাকের মধ্যে দেশটির লুঙ্গি-পাঞ্জাবির চাহিদা ব্যাপক পশ্চিমবঙ্গে।
মুর্শিদাবাদ ও মালদা সীমান্ত এলাকার বড় অংশজুড়ে বাংলাদেশি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দুই দেশের প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও গোপন পথে আসছে এসব পণ্যসামগ্রী।
এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের ক্রেতা সুরক্ষা বিভাগের এক আধিকারিক অবিনাশ চট্টোপাধ্যায় জানান, বাংলাদেশের বেশকিছু পণ্য আছে, যেগুলো বৈধ পথেই এ দেশে আসে বলে আমরা জানি। সেগুলোর মান যথেষ্ট ভালো হওয়ায় এখানকার বাঙালির মন জয় করতে পেরেছে। তবে চোরাপথে যদি কিছু আসে, তার দায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর।
বনগাঁ সীমান্ত থেকে শুরু করে মেট্রোপলিটন বাইপাস-সংলগ্ন মুকুন্দপুর, পাটুলি, কসবার মুদি দোকান এবং ছোট ছোট গ্রোসারি মার্কেটে বাংলাদেশের প্রাণ লিচি, চানাচুর, বিস্কুটের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দোকানিরা জানান, ক্রেতারা যে ধর্মেরই হোক, প্রথমে এসে তারা এ খাবারগুলোই খোঁজ করেন।
নিউমার্কেটে বাংলাদেশি ক্রেতা ও পর্যটকদের সংখ্যা কমলেও বাংলাদেশি পণ্যের ঘাটতি হয়নি। বিশেষ করে বাংলাদেশি লুঙ্গির ব্যাপক স্টক রয়েছে বড়বাজার, আলিমুদ্দিন স্ট্রিট, লেনিন সরণির দোকানগুলোতে।
নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার বলেন, বাংলাদেশি পণ্য সব যে চোরাই পথে আসছে তা নয়, বৈধভাবেও আসছে। কোনো পণ্যের চাহিদা থাকলে তা আসতে আমরা বাধা দিতে পারি না।
এছাড়াও মুর্শিদাবাদের লালগোলা ও জলঙ্গি সীমান্তের দোকানগুলোতে বাংলাদেশি পণ্যের আধিক্য রয়েছে।
জলঙ্গির স্থানীয় বাসিন্দা মোহাব্বত শেখ বাংলাদেশের লুঙ্গিগুলো নরম হয় উল্লেখ করে বলেন, বিজেপি ঝামেলা করছে। আমরা ওসবের মধ্যে নেই। দীর্ঘদিন থেকে আমরা কেয়া সাবান ব্যবহার করি। যত যা-ই হোক, আমরা ওই সাবানই ব্যবহার করব।
কূটনৈতিক ক্ষেত্রে দুই দেশের সমস্যা থাকলেও দুই বাংলার মানুষ পণ্যের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক রেখেছে। কম দামে ভালো পণ্য পাওয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের প্রতি ভারতীয়দের আগ্রহের কারণ বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার ও সামাজিক আন্দোলনের নেতা বিশ্বেন্দু ভট্টাচার্য।
তার মতে, এর মধ্যে একটি সাইকোলজি লুকিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের প্রোডাক্টগুলোয় বাংলা ভাষায় লেখা থাকে। এর ফলে দিল্লি, নয়ডা, গুজরাটের পণ্যের চেয়ে বাংলাদেশের পণ্যকে বেশি আপন মনে করে পশ্চিমবঙ্গের বড় অংশের বাঙালিরা।