নিজস্ব প্রতিবেদক: মিয়ানমারের রাখাইনে জান্তা সরকারের রক্ষী বাহিনী ও আরাকান আর্মির বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের মধ্যে গোলাগুলি, সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ায় এপারে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। অন্য দিকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনসূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নাফ নদীতে কয়েকটি নৌকায় দুই শতাধিক রোহিঙ্গা অপেক্ষায় করছে। নাফ নদীতে ছোট ছোট ডিঙিতে রোহিঙ্গাদের ভাসতে দেখা গেছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সতর্ক পাহারার কারণে দিনে ঢুকতে পারছেন না রোহিঙ্গারা।
বিজিবি ও কোস্টগার্ড সূত্রমতে, নাফ নদী অতিক্রম করে টেকনাফে অনুপ্রবেশের সময় রোহিঙ্গাবোঝাই চার-পাঁচটি নৌকা মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। একই সময় টেকনাফ সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে বিজিবি ১০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে আবার মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে।
উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর চৌধুরী বলেছেন, ‘রহমতের বিল সীমান্ত দিয়ে কোনো রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। মঙ্গলবার সকালে অস্ত্রসহ ২৩ জন রোহিঙ্গাকে ধরে বিজিবির হাতে তুলে দিয়েছি। আমরা সতর্ক পাহারায় আছি।’
একই মন্তব্য করেছেন টেকনাফের হোয়াইকং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, তাঁদের এলাকা দিয়ে রোহিঙ্গারা প্রবেশের চেষ্টা করছে। গত তিন দিনে ছয়জন রোহিঙ্গাকে বিজিবি আটক করে ফেরত পাঠিয়েছে। আরও কিছু রোহিঙ্গা ডিঙি নিয়ে নাফ নদীতে অবস্থান করছে বলে তাঁরা শুনেছেন। এ জন্য তাঁর এলাকার সব ইউপি সদস্যকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। কোনোভাবেই যেন একজন রোহিঙ্গাও অনুপ্রবেশ করতে না পারে।
প্রসঙ্গত যে, গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সংঘর্ষ চলছে। ইতিমধ্যে বিজিপিকে হটিয়ে তুমব্রু রাইট ক্যাম্প ও ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি আরাকান আর্মি দখলে নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ৪ ফেব্রুয়ারি রোববার দিবাগত রাত তিনটা থেকে দুই পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। পরদিন সোমবার নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামের একটি রান্নাঘরের ওপর মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে দুজন নিহত হন। নিহত দুজনের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নারী, অন্যজন রোহিঙ্গা পুরুষ। এ সময়ে মিয়ানমার সেনা, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য, শুল্ক কর্মকর্তাসহ ৩৩০ জন বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছেন। তাঁরা বর্তমানে বিজিবির হেফাজতে রয়েছেন।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.