মিটার না দেখেই বিল বানিয়ে দিচ্ছে বিদ্যুৎ অফিস!

নিজস্ব প্রতিবেদক: পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কুয়াকাটা জোনের ধুলাসার ইউনিয়নের কাউয়ারচরে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, গত তিন মাস ধরে মিটার রিডিং নেওয়া হয়নি। তবুও প্রতি মাসে অনুমাননির্ভর বিল তৈরি করে বিল গ্রাহকদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বিলের সঙ্গে অতিরিক্ত ইউনিট ও জরিমানাও যোগ করা হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।

স্থানীয়রা জানান, সর্বশেষ মার্চ মাসে মিটার রিডিং নেওয়া হয়েছিল। এরপর এপ্রিল, মে এবং জুন, এই তিন মাসে কেউ মিটার রিডিং করতে আসেননি। ২০ জুন গ্রাহকদের হাতে মে মাসের বিদ্যুৎ বিলের কাগজ পৌঁছায় যেখানে দেখা যায় বিল পরিশোধের শেষ তারিখ ১৮ জুন। অর্থাৎ বিলের কাগজ গ্রাহকের হাতে পৌঁছানোর আগেই সময় শেষ। অনেকে বাধ্য হয়ে জরিমানা দিয়ে বিল পরিশোধ করেছেন।

২৭ জুন আবার জুন মাসের বিলের কাগজ দেওয়া হয়। সেই কাগজেও বিলের ইস্যু তারিখ ছিল ১২ জুন। অথচ গ্রাহকদের হাতে পৌঁছেছে ১৫ দিন পর। এই বিলের শেষ তারিখ ছিল ১ জুলাই অর্থাৎ হাতে পাওয়ার পর মাত্র ৪ দিন সময়। গ্রাহকরা বলছেন, এত স্বল্প সময়ে বিল পরিশোধ করা একজন সাধারণ গ্রাহকের পক্ষে কঠিন।

আরও অভিযোগ রয়েছে, মে মাসে যারা বিল পরিশোধ করেছেন তাদের সেই বিল জুন মাসের সঙ্গে আবার যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেন, মিটারে যে ইউনিট দেখা যায় তার চেয়ে বেশি ইউনিট বিলের কাগজে উল্লেখ করা হয়েছে।

স্থানীয় গৃহিণী রহিমা আক্তার বলেন, আমার প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে বড়জোর ৮০–১০০ টাকা। অথচ এবার বিল এসেছে ৬০০ টাকা সঙ্গে জরিমানাও রয়েছে।

আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আমার ঘরে একটি লাইট এবং মাঝে মাঝে একটি ফ্যান চলে। আগে বিল আসত ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে। এবার এসেছে ৯০০ টাকা। অথচ মিটার রিডিং অনুযায়ী এত ইউনিট খরচ হওয়ার কথা নয়।

স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিক বলেন, অভিযোগগুলো সঠিক। আমি নিজেও একজন ভুক্তভোগী। অনেক সময় বিলের কাগজ আসে জমা দেওয়ার শেষ তারিখের এক বা দুই দিন আগে। যা কিনা একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে তখন বিল পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবু ভয় দেখিয়ে বিল আদায় করা হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যুৎ অফিস থেকে মাইকিং করে ঘোষণা দেওয়া হয়, বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। এতে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে জরিমানা যুক্ত করেও বিল পরিশোধে বাধ্য হন।

এ বিষয়ে কুয়াকাটা পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. মোতাহার উদ্দিন বলেন, আমাদের মিটার রিডারের সংকট রয়েছে। লোকবল কম থাকায় বিল সরবরাহে বিলম্ব হয়েছে। বিল বেশি আসার অভিযোগ গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। যেসব এলাকায় সমস্যা হয়েছে, সেগুলোর সমাধান করা হবে।

এদিকে ভুক্তভোগীরা নিয়মিত মিটার রিডিং, নির্দিষ্ট সময়ে বিল প্রদান ও ভুল বিল সংশোধনের ব্যবস্থা নিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

ইকুয়েডরের কারাগারে ভয়াবহ দাঙ্গায় প্রাণ হারিয়েছে ৩১ জন বন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইকুয়েডরের একটি কারাগারে ভয়াবহ দাঙ্গায় অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগের শ্বাসরোধ ও ফাঁসিতে ঝুলে মৃত্যু হয়েছে। রোববার (০৯ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা

ছাত্রীকে এক থাপ্পড়ে রণক্ষেত্র চবি এলাকা: শিক্ষাঙ্গনে আবার অস্থিরতা

ডেস্ক রিপোর্ট: দেরিতে বাসায় প্রবেশের চেষ্টা নিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে বাসার দারোয়ানের বাগ্‌বিতণ্ডা। এরপর দারোয়ানের এক থাপ্পড়। এর জেরেই ধারালো অস্ত্র, ইট, পাথর ও লাঠিসোঁটা নিয়ে

মুসলিম নির্যাতন বন্ধ না করলে হুমকিতে পড়তে পারে বৃহত্তর ভারতের অস্তিত্ব

ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্লেষকরা সাবধান করে দিয়েছেন যে, ভারতের একক হিন্দু রাষ্ট্র কায়েমের চেষ্টায় মুসলমানরা নয়, বরং দেশটির হিন্দুরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ভারতে মুসলমানদের নিপীড়ন ও উৎখাতকে

আগে গণভোট না হলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না: তাহের

নিজস্ব প্রতিবেদক: গণভোট আগে না হলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের জাতীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো.

রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে চিলাহাটিগামী তিতুমীর এক্সপ্রেসের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সাড়ে ৬টার দিকে পুঠিয়ায়

উল্লাপাড়ায় জামায়েত ইসলামীর প্রতিনিধি সম্মেলণ ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত 

জুয়েল রানা: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী হাটিকুমরুল ইউনিয়ন শাখার আয়োজনে প্রতিনিধি সম্মেলণ ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের