
অনলাইন ডেস্ক: মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের পদত্যাগের দাবিতে শনিবার (২৬ জুলাই) ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও প্রতিশ্রুত সংস্কার বাস্তবায়নে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে হাজার হাজার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। বিক্ষোভে অংশ নেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং সদ্য শতবর্ষে পদার্পণকারী মাহাথির মোহাম্মদও।
বিক্ষোভকারীরা ‘তুরুন আনোয়ার’ (সরে দাঁড়াও আনোয়ার) লেখা ব্যান্ডানা ও কালো টি-শার্ট পরে কুয়ালালামপুরের কেন্দ্রস্থলে সমবেত হন এবং পরে স্বাধীনতা স্কোয়ারে মিছিল করে জড়ো হন। সেখানে বিরোধী দলের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন। পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা কমপক্ষে ১৮ হাজার।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ২০২২ সালের নভেম্বরে সংস্কারের অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষমতায় এলেও সাম্প্রতিক সময়ে কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এবং ভর্তুকি হ্রাসসহ নানামুখী অর্থনৈতিক পদক্ষেপের কারণে তিনি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এসব সিদ্ধান্তের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সাধারণ জনগণ।
জনঅসন্তোষ প্রশমনে সরকার সম্প্রতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য নগদ সহায়তা, জ্বালানির দামে ভারসাম্য আনা ও অতিরিক্ত অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবুও তাতে জনরোষ কমেনি।
এক ইসলামী ছাত্র সংগঠনের ২৩ বছর বয়সী সদস্য নুর শাহিরাহ লেমান বলেন, “বর্ধিত কর ও বিদ্যুৎ শুল্ক সাধারণ জনগণের কাঁধেই বেশি বোঝা চাপাবে।”
এদিকে, সম্প্রতি দুর্নীতির মামলায় সরকারঘনিষ্ঠ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘটনায় বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপের অভিযোগও উঠেছে আনোয়ারের বিরুদ্ধে। শীর্ষ বিচারপতি নিয়োগে বিলম্ব নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। তবে আনোয়ার এসব অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছেন।
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, “নির্দোষ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, আর প্রকৃত অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছেন।” তিনি আনোয়ারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের হয়রানির অভিযোগও তোলেন।
মাহাথির ও আনোয়ারের মধ্যকার সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার বিষয়। ২০১৮ সালে বারিসান ন্যাশনাল জোট সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে একসঙ্গে হলেও অভ্যন্তরীণ বিরোধে তাদের জোট টিকেছিল মাত্র দুই বছর।
সূত্র: রয়টার্স