অনলাইন ডেস্ক: মাত্র ১১ বছর বয়সে মায়ের অপমান সহ্য করতে হয়েছিল সোনু কাশ্যপকে। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে তিনি অপেক্ষা করেছেন এক দশক। শেষ পর্যন্ত ২১ বছর বয়সে, মায়ের অপমানের জবাব দিতে গিয়ে হত্যা করেছেন সেই ব্যক্তিকে—যিনি একসময় প্রকাশ্যে তার মাকে চড় মেরেছিলেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের রাজধানী লক্ষ্ণৌতে। গত ২২ মে কল্যাণপুর এলাকায় মনোজ কুমার (৩২) নামে এক ব্যক্তিকে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন সোনু ও তার সহযোগীরা। সোমবার (২১ জুলাই) উত্তর প্রদেশ পুলিশ এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
লক্ষ্ণৌর পুলিশ জানায়, ২০১৫ সালে সোনুর বয়স ছিল ১১ বছর। সে সময় তার মাকে প্রকাশ্যে মারধর করেন মনোজ কুমার। ওই ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তার মা, এমনকি স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেন এবং পরবর্তীতে মৃগী রোগে আক্রান্ত হন। মায়ের সেই অপমান ও কষ্টের কথা ভুলতে পারেননি সোনু।
সম্প্রতি লক্ষ্ণৌর মুনশিপুলিয়া ক্রসিং এলাকায় নারকেলের পানি বিক্রি করতে দেখে মনোজকে চিনে ফেলেন সোনু। এরপর প্রতিশোধ নিতে বন্ধুদের নিয়ে পরিকল্পনা করেন। ২২ মে মনোজের কাজ শেষে ফেরার পথে তাকে ওৎ পেতে থাকা সোনু প্রথমে লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন। পরে তার চার বন্ধু—সানি কাশ্যপ (২০), সালমান (৩০), রঞ্জিত কুমার (২১) ও রহমত আলী (২৫)—মনোজকে নির্মমভাবে মারধর করেন। একপর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা পালিয়ে যান।
হত্যার প্রায় দুই মাস পর, একটি কমলা রঙের টি-শার্টে ধরা পড়ে হত্যার সূত্র। ‘সিম্পসন’ কার্টুন প্রিন্ট করা সেই টি-শার্ট মনোজ হত্যার সময় ব্যবহৃত হয়েছিল। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজে টি-শার্টটির ছবি দেখে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পরে একজন তরুণের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া ছবিতে একই টি-শার্ট দেখা যায়।
সেখানে থেকে প্রযুক্তির সহায়তায় ওই তরুণের অবস্থান শনাক্ত করে পুলিশ। এরপর ডেলিভারি বয়ের ছদ্মবেশে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সোনু কাশ্যপ মনোজকে হত্যার দায় স্বীকার করেন।
লক্ষ্ণৌর পূর্ব বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার শশাঙ্ক সিং বলেন, “ঘটনার দিন সোনু তার বন্ধুদের নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটায়। আমরা প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।”
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.