
নিজস্ব প্রতিবেদক: কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন তুঙ্গে, যখন শিক্ষার্থীরা নতুন করে আন্দোলন শুরু করছে এবং সেই আন্দোলনের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ যুক্ত হচ্ছে, কেউ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে, কেউ নানা মতলবে ঠিক সেই সময় ঢাকার সংসদ সদস্যদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ এবং অনেকেই মাঠে দেখা যাচ্ছে না। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকার এমপিদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজনকে মাঠে দেখা গেছে। এদের মধ্যে যাত্রাবাড়ী এলাকায় স্বতন্ত্র এমপি ড. আওলাদ হোসেন মাঠে ছিলেন। কিন্তু নারী কোটায় নির্বাচিত সানজিদা খানমকে কোথাও দেখা যায়নি। তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।’
পুরান ঢাকার সাঈদ খোকন মাঠে ছিলেন। কিন্তু পুরান ঢাকার অন্যান্য এমপিদেরকে নীরবতা দৃষ্টিকটু পর্যায়ে চলে গেছে। ধানমণ্ডির এমপি চিত্রনায়ক ফেরদৌসকে মাঠে দেখা যায়নি এবং এই আন্দোলন যখন তীব্র আকার ধারণ করে বিশেষ করে সাইন্সল্যাব থেকে ধানমণ্ডি এলাকায় যখন সন্ত্রাস, সহিংসতা দানা বেধে ওঠে তখন তাকে কোথাও দেখা যায়নি। শুধু বৃহস্পতিবার তিনি কিছু শিল্পী সাংস্কৃতিক কর্মী নিয়ে বিটিভিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ধানমণ্ডিতে তার উপস্থিতি অনেক বেশি প্রয়োজন ছিল না।’
মোহাম্মদপুর এলাকার জাহাঙ্গীর কবির নানক সবসময় মাঠে ছিলেন এবং তিনি সংগঠনের মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্য দিনরাত চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কিন্তু ইলিয়াস মোল্লা, সাবের হোসেন চৌধুরী সহ অন্য এমপিদেরকে একেবারে মাঠে দেখা যায়নি।
কামাল মজুমদার গতকাল মাঠে ছিলেন। এর আগে দৃশ্যপটে তার উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। উত্তরার এমপিকেও মাঠে দেখা যায়নি। মাঠে দেখা যায়নি গুলশান ক্যান্টনমেন্ট সহ অভিজাত এলাকার এমপিদেরকেও। সবকিছু মিলিয়ে প্রশ্ন উঠেছে যে ঢাকা শহরে যে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা আছেন, তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারলেন না কেন? এ নিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।’
নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা হলেন সরাসরি জনগণের প্রতিনিধি। তারাই যদি মাঠে না থাকেন, তারাই যদি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা না বলেন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত না করেন তাহলে কাজটি করবে কে?এক্ষেত্রে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।’
ঢাকা শহরে দুজন মেয়র রয়েছেন। দু জনের একজনকেও মাঠে দেখা যায়নি। কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করতেও দেখা যায়নি। মেয়রদের নগরপিতা বলা হয়। এই নগরের অভিভাবক তারা। অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলবেন না তো কে কথা বলবেন? শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক তাদের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে মেয়ররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারতেন। কিন্তু দুই মেয়রকে এক্ষেত্রে শুধু নিষ্প্রভ দেখা যায়নি। তাদের নীরবতা দৃষ্টিকটু পর্যায়ে চলে গেছে। দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস গতরাতে দেশের বাইরে চলে গেছেন।
জনপ্রতিনিধিরাই যদি আন্দোলনের পক্ষে কাজ না করে, এ আন্দোলন নিরসনের ক্ষেত্রে যৌক্তিক এবং কার্যকর ভূমিকা না নেয় তাহলে কে ভূমিকা নেবে সেই প্রশ্ন উঠেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে।’