
নিজস্ব প্রতিবেদক: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা প্রস্তুত করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শ্রেণি বা গ্রেডভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ইতোমধ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ইসি সূত্রে জানা যায়, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে ডিসেম্বর মাসে তফসিল ঘোষণা করা হবে। এরই মধ্যে কমিশন নির্বাচনি কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে এবং বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমও শুরু হয়েছে।
প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগের জন্য অক্টোবরের মধ্যে ‘ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল’ প্রস্তুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ইসি উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে প্যানেল প্রস্তুত করে ইসি সচিবালয়কে জানাতে হবে।
বর্তমানে দেশে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৬৩ লাখ। ৩১ অক্টোবরের পর নতুন নিবন্ধনের মাধ্যমে আরও প্রায় ১০ লাখ ভোটার যুক্ত হবে। গত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্রে প্রায় ১ লাখ ৬৭ হাজার ভোটকক্ষ স্থাপন করা হয়েছিল। সেসময় প্রায় ৯ লাখ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন। এবার ১০ লাখ ৮৯ হাজার ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা, ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কলেজ-মাদরাসার শিক্ষক, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংক-বিমার কর্মকর্তা এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান বা সহকারী প্রধান শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করবেন। সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হবেন দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা, কলেজ-মাদরাসার ডেমনস্ট্রেটর, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। পোলিং অফিসার হবেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
চতুর্থ শ্রেণির (জাতীয় বেতন স্কেল ১৭-২০ গ্রেড) কর্মচারীদের ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত না করতে বলা হয়েছে। তবে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সহায়তার জন্য তাদের আলাদা তালিকা প্রস্তুত করা যেতে পারে।
ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্যানেল তৈরির সময় কর্মকর্তাদের সততা, দক্ষতা, সাহস, নিরপেক্ষতা, পদমর্যাদা, জ্যেষ্ঠতা ও কর্মদক্ষতাকে প্রাধান্য দিতে হবে। কোনো বিতর্কিত কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক দলের সদস্যকে প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। প্রয়োজন হলে বয়স, শারীরিক ও মানসিক অবস্থার তথ্যও তালিকায় সংযোজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নারী ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক নারী সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগে আলাদা নারী প্যানেল তৈরির নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্ধারিত সংখ্যার পাশাপাশি ১০ শতাংশ অতিরিক্ত কর্মকর্তার নামও সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে।
এছাড়া ভোট গ্রহণের বাইরেও রিটার্নিং অফিসার কার্যালয়, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, তথ্য ও ফলাফল সংগ্রহ কেন্দ্র এবং মাঠ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য আলাদা কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছে ইসি।