
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভূকম্পনপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত। দীর্ঘদিন ধরেই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে আসছেন—দেশে বড় মাত্রার ভূমিকম্প ঘটলে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা পড়বে সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে।
ভূতাত্ত্বিকরা বলছেন, বাংলাদেশের নিচ দিয়ে তিনটি টেকটোনিক প্লেট অতিক্রম করেছে। এই অবস্থান দেশটিকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে ফেলেছে। ছোট-বড় কম্পন নিয়মিত অনুভূত হচ্ছে, যা জনমনে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে এবং ভবন ও স্থাপনার কাঠামোগত দুর্বলতা প্রকাশ করছে।
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারির গবেষণায় দেখা গেছে, বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে ঢাকার প্রায় অর্ধেক ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তিনি মনে করেন, অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ন, অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ এবং দুর্বল অবকাঠামো রাজধানীকে চরম বিপদের মুখে ফেলেছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন বলেছেন, “ভূমিকম্পের বড় ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা ২০ শতাংশেরও কম।” তার মতে, প্রশিক্ষিত জনবল, উদ্ধার সরঞ্জাম ও সচেতনতার ঘাটতি বড় বিপর্যয়ে উদ্ধারকাজকে অচল করে দিতে পারে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, তারা ভূমিকম্পসহ বড় দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে নতুন কর্মপদ্ধতি ও প্রশিক্ষণ বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এখনই শুরু করতে হবে পরিকল্পিত নগরায়ন, ভূমিকম্প সহনীয় ভবন নির্মাণ, আর জনসচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম। সময় নষ্ট করলে এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।