‘ভিআইপিরা চিকিৎসার জন্য বিদেশ যান কেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক: মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই মুহূর্তে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান করছেন। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে যুক্তরাজ্যে যাবেন এবং সেখানে তিনি চিকিৎসা করাবেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে গেছেন। সিঙ্গাপুরে গেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও।

কদিন আগে চিকিৎসা শেষে সিঙ্গাপুর থেকে ফিরেছেন বিএনপির আরেক নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বিদেশ থেকে চিকিৎসা শেষে ফিরেছেন বিএনপির আরেক নেতা মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি কিংবা অন্য কোন রাজনৈতিক দলের নেতারা দেশে সাধারণত চিকিৎসা নেন না। চিকিৎসার জন্য তারা বিদেশে যান। বাংলাদেশের চিকিৎসায় তাদের আস্থা নেই? অবশ্য আস্থা থাকবে কি করে? যেখানে সুন্নতে খাৎনা করতেই শিশুর মৃত্যু হয়, সেখানে বড় বড় ভিআইপিরা তাদের জীবনের ঝুঁকি কিভাবে নেবেব।

বাংলাদেশে নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। অবৈধ ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধের অভিযান পরিচালনা করছেন। কিন্তু এই অভিযান শেষ পর্যন্ত কতদূর যাবে বা এই অভিযানের পরিণতি কি হবে তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ রয়েছে।’

এর আগে এরকম অভিযান শুরু করেছিলেন সাবেক স্বাস্থ্য সচিব মো: আবদুল মান্নান। কিন্তু সেই সময় মন্ত্রীর প্রবল আপত্তির মুখে সেই অভিযান স্থগিত হয়ে যায়। এখন অবশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী দুজনই সৎ, তাদের কর্মজীবনে দুর্নীতির কোন কালিমা নেই। তারা আন্তরিক ভাবেই দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা করছেন স্বাস্থ্য খাতকে। স্বাস্থ্যসচিবেরও সততার রেকর্ড রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যে শুদ্ধি অভিযান তার দিকে তাকিয়ে আছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর যদি আস্থা ফেরাতে হয় তাহলে ভিআইপি বা যারা রাজনৈতিক নেতা তাদের বাংলাদেশেই চিকিৎসা গ্রহণের মানসিকতা তৈরি করতে হবে। এবং এই সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে সাধারণ মানুষ চিকিৎসার ব্যাপারে কতটুকু আস্থাশীল হবে সে প্রশ্ন থেকেই যাবে৷

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একমাত্র দেশে চিকিৎসা নেন। তিনি ১০ টাকায় টিকিট কেটে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চক্ষু পরীক্ষা করেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিনি যান আশুলিয়া বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা বিশেষায়িত হাসপাতালে। খুব জটিল পরিস্থিতি না হলে বা দেশের চিকিৎসকরা অপারগতা প্রকাশ না করলে শেখ হাসিনা বিদেশে চিকিৎসার জন্য যান না। কিন্তু শেখ হাসিনার এই নীতি বা শেখ হাসিনার এই সংস্কৃতিকে কোনভাবেই অনুসরণ করেন না আওয়ামী লীগের নেতারা। হাঁচি কাশি হলেও আওয়ামী লীগের নেতারা বিদেশে যান।

শুধু আওয়ামী লীগের নেতাদেরকে দোষ দিয়ে লাভ কি। বিএনপির নেতারা এ ক্ষেত্রে তো আরও একধাপ ওপরে। বিএনপির কোনো নেতার সর্দি জ্বর হলেও তারা বিদেশে যান। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশে কোনো চিকিৎসা করেন না। দেশে চিকিৎসার ওপর তার আস্থা নেই বলে ধারণা করা হয়। বিএনপি দলগতভাবে দেশে চিকিৎসায় বিশ্বাস করে না। বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়া তাদের প্রধান দাবি। এই দাবিতে তারা হরতাল পর্যন্ত করেছে। বিএনপির যে বড় বড় নামকরা চিকিৎসকরা রয়েছেন, যারা চেম্বার খুলে রীতিমতো রোগীদের গলা কাটেন, তারাও বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে চান। এটি কি তাদের অযোগ্যতা প্রমাণ করে না? বিএনপিপন্থি যে সমস্ত চিকিৎসকরা এর আগে বিভিন্ন বড় বড় হাসপাতালে চিকিৎসা করছেন তাহলে কি তারা অদক্ষ অযোগ্য ছিলেন’?

বাংলাদেশে শুধুমাত্র বাংলাদেশের শুধুমাত্র রাজনীতিবিদরা না, বড় বড় ব্যবসায়ী, উচ্চবিত্তরা ও দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর কোন আস্থা রাখেন না। তারা যে কোন অসুখ বিসুখের জন্য বিদেশে যান। মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চ বিত্তরা জটিল কঠিন অসুখের জন্য ভারতে যান। আর একটু ধর্নাঢ্য হলে তারা যান সিঙ্গাপুরে বা ব্যাংককে। এখন দুবাই বা সংযুক্ত আমিরাতেও স্বাস্থ্য পরীক্ষার ঠিকানা হয়েছে।

একটু বেশি বড়লোকরা চিকিৎসার জন্য যান লন্ডন বা অ্যামেরিকায়। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা যদি দেশের চিকিৎসায় আস্থাশীল না হন তাহলে সাধারণ মানুষ কতটুকু নিশ্চিন্তে চিকিৎসা নিতে পারবে। সেক্ষেত্রে যে অঘটনগুলো ঘটছে সেই অঘটনের পর গরীব মানুষও স্বাস্থ্যের জন্য বিদেশমুখি হবেনা তা কে গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারে। এ কারণে এখন স্বাস্থ্য খাতে সবার আগে আস্থা ফেরানোটা জরুরী বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

জোরালো সম্পর্কের পথে ঢাকা-ইসলামাবাদ

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক আর এগোয়নি। তবে ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে

পদ্মা সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠানের ব্যয় ৫ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পদ্মা বহুমুখী সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে আগামী শুক্রবার (৫ই জুলাই)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।

প্রেমের টানে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে তুরস্কের যুবক

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: কথায় আছে প্রেম মানে না কোন বাধা, আর কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ভালোবাসার জন্য বিশ্ব সংসার তন্নতন্ন করে খুঁজেছিলেন ১০৮টা নীল পদ্ম। তাইতো সাড়ে

যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামীকাল যুক্তরাজ্যের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে যে সমস্ত আগাম জরিপ প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে ঋষি সুনাকের ভরাডুবি অত্যাসন্ন বলেই মনে করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন

জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী বছরের জানুয়ারিতে ঐতিহ্যবাহী বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র

শেখ মুজিবসহ ৪ শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল

ঠিকানা ডেস্ক: মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী, এএইচএম কামারুজ্জামানসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী চার শতাধিক রাজনীতিবিদের (এমএনএ-এমপিএ)