
নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে রাজশাহী জেলার চকধাদাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষের সৃষ্টি করেছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রধান শিক্ষক শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন না করে সেখানে একটি ছাগল বেঁধে রাখেন, যা স্থানীয়দের কাছে শহীদ মিনারের প্রতি অবমাননাকর হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে।
শহীদ মিনার ভাষা শহীদদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানোর একটি পবিত্র স্থান। সাধারণত সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ, নীরবতা পালন ও মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রধান শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি ভাষা আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থী এবং শহীদ মিনারের মর্যাদাহানিকর।
এ বিষয়ে চকধাদাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আকরাম আলীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আমি ব্যস্ত আছি, এখন কথা বলার সময় নেই। ৫ আগস্টের পর থেকে মন ভালো নেই, তাই এবার শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হয়নি। শহীদ মিনার নিচু জায়গায় হওয়ায় আমরা সাধারণত তালা খুলি না। আমি ছাগল বাঁধিনি। স্কুলের পিকনিকের প্রস্তুতির কারণে ব্যস্ত ছিলাম।’
এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)’ দেবাশীষ বসাক বলেন, ‘শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব। যদি কেউ এর পবিত্রতা নষ্ট করে, তাহলে তা নিন্দনীয় ও দুঃখজনক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছুটি থেকে ফিরলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পুঠিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লায়লা আখতার জাহান জানান, ‘শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগ ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছে। অনেকের মতে, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কেউ শহীদ মিনারের মতো জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার সাহস না দেখায়।’