নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এই প্রথম কোনো পাকিস্তানি মালবাহী জাহাজ বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়েছে। বুধবার পাকিস্তানের করাচি থেকে ছেড়ে আসা জাহাজটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে ভেড়ে। নানা কারণেই পাকিস্তানি মালবাহী জাহাজটির বাংলাদেশের বন্দরে ভেড়ার বিষয়টিকে ঐতিহাসিক বলা হচ্ছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ সরাসরি এই শিপিং রুটকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যও ব্যবসায়িক সম্পর্কের উন্নয়নে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সাগরপথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ঐতিহাসিক যুগে বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রবেশ করলেও ভারত উদ্বিগ্ন। টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার নিবন্ধে বলা হয়েছে, বিগত ৫ দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো, পাকিস্তানি মালবাহী জাহাজ বাংলাদেশের বন্দরে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে এ ধরনের সরাসরি সামুদ্রিক সংযোগে কারণে ভারতীয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির আশঙ্কা আছে।
তিন মাস আগেও বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক তিক্ত ছিল। বাংলাদেশের বন্দরগুলো গত পাঁচ দশক ধরে পাকিস্তানের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সিঙ্গাপুর বা কলম্বোয় ট্রানশিপমেন্টের মাধ্যমে হতো। তবে হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্য স্থাপন শুরু করলো।'
ভারত আশঙ্কা করছে, পাকিস্তানি জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রামে আসবে, ফলে অবৈধ পণ্য বাংলাদেশের মাধ্যমে ভারতে পৌঁছে যেতে পারে। এছাড়া ভারতের চিরশত্রু পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বৃদ্ধি দিল্লির জন্য মারাত্মক বিপর্যয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, বাংলাদেশ নৌবাহিনী আগামী ২০২৫ সালে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক নৌমহড়া আমান-২০২৫-এ অংশ নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এটি হবে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ নৌ মহড়ায় অংশগ্রহণ। এরই অংশ হিসেবে গত মাসে একটি ফ্রিগেট পাকিস্তানের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। এসব পদক্ষেপ ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরে নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
এদিকে, চুক্তি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে হিমালয়ের দেশ নেপাল। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাঠাবে দেশটি। চলতি বছরের অক্টোবরের শুরুতে বিদ্যুৎ রপফতানির এই চুক্তিটি হয়।
ড. ইউনূস সরকার ভারতের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে। যা দিল্লির জন্য একটি সতর্ক বার্তা হিসেবে দেখছে ভারতের গণমাধ্যমগুলো।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.