নিজস্ব প্রতিবেদক: স্থলবন্দর দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু পণ্য রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। শর্ত অনুযায়ী তৈরি পোশাক, ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত ও আসবাব রপ্তানি করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। আগে যেসব স্থলবন্দরে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে রপ্তানিমুখী গাড়ির দীর্ঘ লাইন থাকত, এখন সেখানে শুধু কয়েকটি পণ্যবাহী গাড়িই চোখে পড়ছে। সব মিলিয়ে বন্দর-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নামতে পারে।
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় যশোরের বেনাপোল বন্দরে আসা ৩৬টি ট্রাকের মধ্যে ১২টি সোমবার ফেরত গেছে ঢাকায়। ২৪টি ট্রাক এখনও বন্দরের কার্গো ইয়ার্ডে দাঁড়িয়ে। ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস এখনও আগের এলসি/টিটির পণ্য আমদানি বিষয়ে সমাধান দেয়নি। এসব পণ্য এখন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে রপ্তানি হবে বলে জানা গেছে।
গত শনিবার কিছু পণ্য ভারতে গেলেও রোববার থেকে বন্ধ রয়েছে সিলেটের কয়েকটি স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন। শেওলা স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার বিকাশ সরকার জানান, শনিবার সাত ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে। রোববার থেকে কোনো পণ্য যায়নি।
তৈরি পোশাক ও খাদ্যসামগ্রীর মতো পণ্যের ওপর ভারতের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব সিলেটের স্থলবন্দরগুলোতে খুব একটা পড়বে না বলে দাবি করছেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার তাহসিনুর রহমান। গতকাল মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর শুল্ক স্টেশন দিয়ে কিছু মাছ রপ্তানি হয়েছে। অন্য কোনো পণ্য যায়নি বলে জানিয়েছেন স্টেশনের স্টাফ মতছির আলী। জুড়ী উপজেলার বটুলী শুল্ক স্টেশন দিয়ে দু’দিন ধরে রপ্তানি বন্ধ। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নিষেধাজ্ঞার পর কোনো গাড়ি ভারতে যায়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে গতকাল শুধু মাছ, ভোজ্যতেল ও পাটজাত দ্রব্য ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় রপ্তানি হয়েছে। বন্দরের মৎস্য রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক মিয়া বলেন, ভারতের নিষেধাজ্ঞার ফলে সোমবার প্রায় অর্ধকোটি টাকার পণ্য রপ্তানি কম হয়েছে। এখন মাছ, পাথর ও তেল বাদে বাকি সব পণ্য নেওয়া বন্ধ করেছে ভারত। এতে দুই দেশের ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। দুই দেশের সরকারকে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য অনুরোধ করছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরেও নির্দিষ্ট পণ্যের রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন পোশাক রপ্তানিকারকরা। তবে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কলমবিরতি গতকাল দুপুর ৩টা পর্যন্ত থাকলেও আমদানি স্বাভাবিক। কর্মবিরতি শেষে বিকেলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দেয়।
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দরে সোমবার পাঁচটি বিস্কুটের গাড়ি ও বর্জ্য তুলা-সুতার ১৭টি গাড়ি আটকা পড়ে। এর আগে রোববার ২০টি বিভিন্ন পণ্যের গাড়ি আটকে যায়।,