
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং পশ্চিম তীর দখলের বিল পাশ হওয়ার মধ্যেই ভয়াবহ এক ‘সুনামি’র কবলে পড়েছে দখলদার ইসরাইল। এমনই ভয়াবহ তথ্য জানিয়েছেন ইসরাইলি সংসদ সদস্য গিলাদ কারিভ।
সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্টে (নেসেট) পেশ করা এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের শুরুর দিক থেকে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১ লাখ ২৫ হাজারেরও বেশি ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন— যা এত স্বল্প সময়ে মানবসম্পদের দিক থেকে ইসরাইলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।,
গত ২০ অক্টোবর ইসরাইলি পার্লামেন্টের ইমিগ্রেশন ও অ্যাবসরপশন কমিটিতে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালের শুরু থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ইসরাইলের নিট অভিবাসন ভারসাম্য— অর্থাৎ যারা স্থায়ীভাবে দেশ ত্যাগ করেছেন কিন্তু ফিরে আসার পরিকল্পনা নেই, তাদের সংখ্যা থেকে দীর্ঘমেয়াদি প্রত্যাবর্তনকারীদের বাদ দিলে—১ লাখ ২৫ হাজার ২০০ জনের হ্রাস দেখা গেছে।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, গাজায় ইসরাইলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ এই স্থায়ী দেশত্যাগের সংখ্যাবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গাজা যুদ্ধ চলমান থাকায় ২০২৫ সালেও এই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
ওই কমিটির চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য গিলাদ কারিভ বলেন, ‘এটি কেবল অভিবাসনের ঢেউ নয়— এটি একপ্রকার সুনামি, যেখানে ইসরায়েলিরা দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।’ কনেসেট রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টারের প্রস্তুত করা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে প্রায় ৫৯,৪০০ ইসরাইলি দেশ ছেড়েছেন; ২০২৩ সালে এ সংখ্যা বেড়ে সর্বোচ্চ ৮২,৮০০ জনে পৌঁছায়। ২০২৪ সালের প্রথম আট মাসে প্রায় ৫০,০০০ জন দেশত্যাগ করেছেন।,
এর তুলনায়, ২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি অভিবাসনের বার্ষিক গড় সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০,৫০০ জন। উল্লেখ্য, ইসরাইল ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় গণহত্যামূলক আগ্রাসন শুরু করে, যে আগ্রাসনে প্রায় ৭০,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। দুই বছরের মাথায় চলতি মাসের শুরুতে একটি নাজুক যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে ভয়াবহ এই আগ্রাসনের অবসান ঘটেছে।
তবে দখলদার ইসরাইল গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অমান্য করে বেসামরিক জনগণের ওপর গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ায় সেখানে শান্তির সম্ভাবনা অনিশ্চয়তার আবরণে ঢেকে গেছে। সূত্র: মেহের নিউজ
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.