ব্যাংক মার্জার নিয়ে অনিশ্চয়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচটি ব্যাংক একীভূতকরণের (মার্জার) প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত করেছে। তবে এ উদ্যোগ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ ও খাতসংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, মূল সমস্যার সমাধান না করে কেবল কিছু ব্যাংককে একীভূত করলে সুফল আসবে না, বরং নতুন সংকট তৈরি হতে পারে।

প্রাথমিকভাবে ইউনিয়ন ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংককে একীভূত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে এক্সিম ব্যাংক আলাদাভাবে কার্যক্রম চালাতে আগ্রহী। সম্প্রতি গভর্নর আহসান এইচ মনসুর চার ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যেখানে মার্জারের সম্ভাব্য ব্যয় ও করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, প্রক্রিয়ায় প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এত বড় অঙ্কের অর্থ সরকারি খাত থেকে সরবরাহ করলে বাজেট ঘাটতি বাড়বে। যেখানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক সুরক্ষার মতো জরুরি খাতেই পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না, সেখানে ব্যাংক মার্জারে অর্থ বরাদ্দ কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

ঘোষণার পর থেকেই এসব ব্যাংকের আমানতকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই আমানত তুলে নিচ্ছেন, ফলে তারল্য সংকট তৈরি হচ্ছে। এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন জানিয়েছেন, গত ছয় মাসে তাদের ব্যাংক থেকে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা আমানত তুলে নেওয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন মনে করেন, সরকারি অর্থায়ন ইকুইটি না ঋণ—তা স্পষ্ট করা প্রয়োজন। পাশাপাশি দক্ষ পর্ষদ ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা ছাড়া পরিকল্পনা সফল হওয়ার সুযোগ নেই। ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তফা কে মুজেরি বলেন, অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজি না হলে মার্জার কার্যকর হবে না। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একত্রিত করলেই শক্তিশালী ব্যাংক গড়ে উঠবে না।

সাবেক অর্থসচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী সতর্ক করে বলেছেন, ব্যাংক মার্জারের জন্য সরকারি অর্থায়ন হলে সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।

বিশ্লেষকদের পর্যবেক্ষণ, সুশাসনের অভাব, খেলাপি ঋণ ও তারল্য সংকটের মতো মৌলিক সমস্যার সমাধান না করে শুধু মার্জার করলে কাঙ্ক্ষিত সুফল আসবে না। বরং সরকারি অর্থের অপচয়ের ঝুঁকি থেকেই যাবে।

 

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

ছাত্রলীগ ভেবে জামায়াত নেতার মাছ লুটে নেন বিএনপি কর্মী, ভিডিও ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের মনিরামপুরে জামায়াত নেতার আলমসাধু ভর্তি মাছ লুট করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যের ঘেরের মাছ

তাহসানের শ্বশুর ক্রসফায়ারে নিহত যুবলীগ নেতা পানামা ফারুক

নিজস্ব প্রতিবেদক: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাহসান আর রোজা আহমেদের একটি ছবি আলোরণ তুলেছিল ভক্তদের মাঝে। ভক্তরা বুঝেই গিয়েছিলেন বিয়ে করেছেন এই জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী। শনিবার (৪ জানুয়ারি)।

ইসরায়েল-আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিরল বৈঠকে ফিলিস্তিন নিয়ে আলোচনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল সফর করছেন, যা খুবই বিরল একটি ঘটনা। এই সফরে তিনি ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়গুলো

ভারতে বিমান বিধ্বস্তে অন্তত ১৩৩ জন নিহত

অনলাইন ডেস্ক: ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অন্তত ১৩৩ জন নিহত হয়েছেন। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম নিউজ-১৮ জানিয়েছে,

জুয়ার আসর বসানোয় কৃষক দলের নেতা বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক: ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগে ৯ নম্বর ভাংনামারী ইউনিয়ন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার (৮ জানুয়ারি)।

স্ত্রীকে চমক দিতে দ্রুত ডিউটি শেষ করে,বাসায় গিয়ে দেখেন স্ত্রী পরকীয়া’

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশেষ দিনে প্রিয়তমাকে সারপ্রাইজ দিতে নানা উপহার নিয়ে অফিস থেকে আগে আগে বাসায় ফেরেন এক স্বামী। ভেবেছিলেন, আজকের দিনটি হবে ভালোবাসা আর আনন্দে