নিজস্ব প্রতিবেদক: বেনজীরের সাথে বিভিন্ন সময় যারা চাকরি করছেন, যারা বেনজীরের ঘনিষ্ঠ এবং অবৈধ কর্মকাণ্ডের হিস্যা ছিলেন তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তকারী কর্মকর্তারা বেনজীরের ঘনিষ্ঠদের তালিকা তৈরি করছে। তাদেরকেও দুদকের জালে আবদ্ধ করা হবে বলে জানা গেছে'।
উল্লেখ্য যে, বেনজীর আহমেদ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এই তিন সময় তার নিজস্ব অনুগত কিছু পুলিশ কর্মকর্তা ছিল, যে সমস্ত পুলিশ কর্মকর্তারা বেনজীরের ছত্রছায়ায় বেপরোয়া হয়েছিলেন তাদেরকে ভালো পোস্টিং দেওয়া হত। তাদেরকে দুর্নীতির লাইসেন্স দেওয়া হত। এর বিনিময়ে এই সমস্ত কর্মকর্তারা বেনজীরের অবৈধ কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করতেন। অনেকেই বেনজীরকে হিস্যা দিতেন। যারা বেনজীরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে চিহ্নিত ছিলেন তারা পুলিশের মধ্যে অত্যন্ত প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন। এদের মধ্যে কারও কারও বিপুল বিত্তের খবর ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন এই সূত্র ধরে বেনজীরের ঘনিষ্ঠদের তালিকা করছে এবং তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে বলে জানা গেছে।'
বেনজীর আহমেদ পুলিশের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন। প্রথমে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি র্যাবের মহাপরিচালক এবং সব শেষে তিনি পুলিশের আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখান থেকে তিনি অবসরে যান। এই তিনটি ধাপের তার কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তকারী কর্মকর্তারা দেখেছেন যে, ১০ থেকে ১০ জন কর্মকর্তা ছিলেন, যারা বেনজীরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তবে মজার ব্যাপার হল যে, বেনজীর একজন পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বেশিদিন সম্পর্ক রাখেননি। বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন সময়ে তিনি ব্যবহার করেছেন, তাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা করেছেন এবং তাদেরকে দিয়ে বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ড করেছেন। তারপর তাদেরকেই আবার ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন।
আবার পুলিশের মধ্যে কেউ কেউ বলেন যে, বেনজীর আহমেদ পুলিশ কমিশনার হিসাবে যে রকম ছিলেন, পুলিশের আইজিপি হিসেবে আর তেমনটি থাকেননি। এই সময় বেনজীর আহমেদকে যারা আগে সমর্থন করতেন, বেনজীর আহমেদ পুলিশপ্রধান হোক এরকম মনোভাব পোষণ করতেন, পুলিশ প্রধান হওয়ার পর তারাই বেনজীর আহমেদের কাছ থেকে দূরে সরে গেছেন। তার বেপরোয়া কর্মকাণ্ড দেখে তারা স্তম্ভিত হয়েছেন এবং হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন। কিন্তু যেহেতু তিনি পুলিশ প্রধান এ কারণে তারা নীরবে সহ্য করেছেন। কিন্তু এই সময়ে কিছু কিছু চাটুকার এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদের চারপাশে ঘিরে ছিলেন।
বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে দেখা গেছে যে, পুলিশ কমিশনার থাকা অবস্থায় বেনজীর আহমেদ এত দুর্বৃত্ত এবং দুর্বিনীত হয়ে ওঠেনি'। এসময় তার চারপাশে যারা ছিল তাদের মধ্যে অনেকে সৎ এবং নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা ছিল এবং তাদের কারণেই বেনজীর আহমেদ লাইমলাইটে এসেছেন।
র্যাবের মহাপরিচালক হওয়ার পর থেকেই বেনজীর বেপরোয়া হয়ে উঠেন এবং এই সময় তিনি দুর্নীতবাজদের একটি সার্কেল তৈরি করেন এবং তাদের মাধ্যমে তিনি চাঁদাবাজি এবং অবৈধ তৎপরতা করেন। পুলিশ প্রধান হওয়ার পর এই চক্রেরই কয়েকজনকে তিনি তার চারপাশে নিয়ে আসেন। এবং এদেরকে ঘিরেই গড়ে উঠে বেনজীরের দুর্নীতির চক্র। এবং অপ্রতিরোধ্য গতিতে তিনি দুর্নীতি প্রকাশ্যে এবং বেপরোয়া ভাবে দুর্নীতি করা শুরু করেন। এখন দুর্নীতি দমন কমিশন বেনজীরের যারা সহযোগী ছিলেন, বেনজীরের সাথে যারা দুর্নীতিতে জড়িয়ে ছিলেন তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.