অনলাইন ডেস্ক: আজ ১২ জুলাই, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব মালালা দিবস’। নারী শিক্ষা ও মানবাধিকার রক্ষায় লড়াই করে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছেন পাকিস্তানি সাহসী কিশোরী মালালা ইউসুফজাই। এই দিনে ২০১৩ সালে জাতিসংঘ মালালার ১৬তম জন্মদিনে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘মালালা দিবস’ ঘোষণা করে।
১৯৯৭ সালের ১২ জুলাই পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার মিনগোরায় জন্ম মালালার। বাবা জিয়াউদ্দিন ও মা তুর পেকাই ইউসুফজাইয়ের কন্যা মালালা ছোটবেলা থেকেই শিক্ষার প্রতি অনুরাগী ছিলেন। ২০০৭ সালে তালেবানের নেতৃত্বে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ হলে, ‘গুল মাকাই’ ছদ্মনামে বিবিসি উর্দুতে ডায়েরি লিখে তিনি নজর কাড়েন। তার লেখায় উঠে আসে তালেবানি শাসনের ভয়াবহতা ও একজন ছাত্রীর অসহায় বাস্তবতা।
২০০৯ সালে নিউইয়র্ক টাইমস তার জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করে। পরের বছর তালেবান থেকে মুক্ত হয় সোয়াত, মালালা ফের স্কুলে যেতে শুরু করেন। কিন্তু ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর তাকে গুলি করে তালেবান। বেঁচে যান মালালা, চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় যুক্তরাজ্যে।
সেখানেই থেকে যান, লেখাপড়া চালিয়ে যান বার্মিংহামের এজবাস্টন হাই স্কুলে। পরবর্তীতে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে মালালা নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন, যা তাকে বিশ্বের কনিষ্ঠতম নোবেল বিজয়ীতে পরিণত করে। লিখেছেন আত্মজীবনী ‘আই অ্যাম মালালা’, যা হয়ে ওঠে বেস্টসেলার। তার ওপর নির্মিত ‘হি নেমড মি মালালা’ তথ্যচিত্র প্রচারিত হয়েছে ১৭৫টি দেশে, ১১টি ভাষায়।
সম্মাননায় ভাসছেন তিনি—পাকিস্তানের জাতীয় যুব শান্তি পুরস্কার, শাখারভ পুরস্কার, টাইম সাময়িকীর ‘শীর্ষ প্রভাবশালী ১০০’ তালিকায় স্থান, কানাডার সম্মানসূচক নাগরিকত্বসহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।
আজকের দিনটি কেবল মালালার জন্মদিন নয়, বরং নারী শিক্ষা ও অধিকার আদায়ের এক অম্লান প্রতীক হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে উদযাপনের দিন।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.