
নজরুল ইসলাম: “জলাতঙ্ক নির্মূলে কাজ করি সবাই মিলে” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস-২০২৫। দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের উদ্যোগে র্যালি, আলোচনা সভা এবং দিনব্যাপী ফ্রি ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের হলরুমে এক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ.কে.এম. আনোয়ারুল হক। শুরুতেই তিনি শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এরপর সদর উপজেলা ভেটেরিনারী সার্জন ডা. মো. মেরাজ হোসেন মেসবাহ প্রজেক্টরের মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি রোগটির সংক্রমণ, লক্ষণ, ক্ষতিকর প্রভাব ও প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন।
আলোচনা সভায় জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা জলাতঙ্ক নির্মূলে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। বক্তারা বলেন, জলাতঙ্ক এখনো একটি ভয়াবহ রোগ হলেও সময়মতো ভ্যাকসিন প্রদান করলে এ রোগ শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই পোষা প্রাণি ও পথকুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি।
আলোচনা শেষে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের কাজিপুর মহাসড়কের ভাসানী মোড় (সমাজকল্যাণ মোড়) পর্যন্ত গিয়ে পুনরায় প্রাণিসম্পদ অফিসে এসে শেষ হয়। এরপর সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে দিনব্যাপী বিনামূল্যে টিকা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ.কে.এম. আনোয়ারুল হক। তিনি বলেন, সরকার কর্তৃক এ জেলায় প্রথম পর্যায়ে ৬০০ কুকুর, বিড়াল ও অন্যান্য পোষা প্রাণির জন্য জলাতঙ্ক প্রতিরোধক ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়েছে। আজ সারাদিন জেলা ও উপজেলার প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে দিনব্যাপী বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী এ কার্যক্রমের পরিধি আরও বাড়ানো হবে।
সার্বিক আয়োজনে প্রাণিসম্পদ বিভাগের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সেবা গ্রহীতা ও পোষা প্রাণির মালিকরা। তারা বলেন, বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে এবং এতে জলাতঙ্ক নির্মূলে বড় ধরনের সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক ডা. তোফাজ্জল হোসেন, জেলা ট্রেনিং অফিসার ডা. মোহাম্মদ সোহেল রানা।
এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর হোসেন, তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আমিনুল ইসলাম, বেলকুচি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হক, শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বেল্লাল হোসেন, কাজিপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. দিদারুল আলমসহ জেলার সকল ভেটেরিনারি সার্জন ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা-কর্মচারী, উপজেলা ও ইউনিয়নের এআই টেকনেশিয়ান ও বিভিন্ন এলাকার খামারিরা।