নিজস্ব প্রতিবেদক: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে অক্টোবরের মধ্যভাগেই আসনভিত্তিক প্রার্থীদের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
দলীয় সূত্র জানায়, সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়ে সাতটি পৃথক সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন তারেক রহমান। এর মধ্যে সরকারি তিন সংস্থা—জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) এবং পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)—এর কাছ থেকে মাঠপর্যায়ে নেতাদের জনপ্রিয়তা ও ভাবমূর্তি সম্পর্কিত তথ্য নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চারটি বেসরকারি সূত্র থেকেও তথ্য সংগ্রহ চলছে—ছাত্রদলের নিরপেক্ষ নেতা, বিএনপিপন্থী শিক্ষক সমাজ, সাংবাদিক ও তারেক রহমানের আস্থাভাজন ব্যক্তিদের মাধ্যমে।
প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে ১৮০ থেকে ২০০ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে সবুজ সংকেত দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। গত দুই মাসে তিনি সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে একাধিক দফায় ভার্চুয়ালি কথা বলেছেন। যেসব আসনে একাধিক প্রার্থী রয়েছেন, সেখানে প্রার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে—দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে, ভিন্ন অবস্থান নিলে মনোনয়ন বাতিল হতে পারে।
সূত্রগুলো জানায়, গ্রিন সিগন্যাল পাওয়া প্রার্থীদের ওপরও পর্যবেক্ষণ থাকবে। নির্বাচনি এলাকায় ঐক্য বজায় রাখতে না পারলে বা বিভাজনে জড়ালে তারা ‘রেড জোনে’ পড়বেন, অর্থাৎ মনোনয়ন হারানোর ঝুঁকিতে থাকবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “বিএনপি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আসনভিত্তিক জনপ্রিয়তা ও জয়ের সম্ভাবনাই মনোনয়ন বাছাইয়ের প্রধান মানদণ্ড।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, প্রাথমিকভাবে প্রার্থীদের মাঠে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে, তবে অফিসিয়াল মনোনয়ন আসবে তফসিল ঘোষণার পর।
ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের ২৪ জনকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আছেন—নোয়াখালী-১ আসনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, নোয়াখালী-২ এ জয়নুল আবদিন ফারুক, লক্ষ্মীপুর-৩ এ শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কক্সবাজার-১ এ সালাহউদ্দিন আহমদ, কক্সবাজার-৪ এ শাহজাহান চৌধুরী প্রমুখ। চট্টগ্রাম বিভাগের কয়েকজন প্রার্থী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বরিশাল বিভাগেও একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। বিভাগটির দায়িত্বে রয়েছেন ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আকন কুদ্দুসুর রহমান ও মাহবুবুল হক নান্নু।
এছাড়া ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুরসহ বিভিন্ন বিভাগেও প্রার্থী বাছাই প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সূত্র বলছে, দলের অভ্যন্তরীণ জরিপ, তৃণমূলের মতামত এবং গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতেই বিএনপি এবার প্রার্থী চূড়ান্ত করছে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, “জরিপের মাধ্যমে প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাই করা হয়েছে। গ্রিন সিগন্যাল শিগগিরই দেওয়া হবে, তবে সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারণ হয়নি।”
দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রাথমিক ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পাওয়া প্রার্থীদের মধ্য থেকেই তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির পার্লামেন্টারি বোর্ড চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.