
তানজিলা আক্তার রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী মহানগরীর ভদ্রা এলাকায় অবস্থিত ভদ্রা বস্তিতে নদী ভাঙনের ফলে সর্বস্ব হারানো মানুষেরা মানবেতর জীবনযাপন করে। এই তথ্য জানতে পারার পর সেখানে যায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একদল তরুণ তরুণী। বাস্তুচ্যুত নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে গড়ে তোলে উদ্ভসিনী টিম। প্লাস্টিক,পলিথিন সহ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন পণ্য ব্যবহারের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহারে তারা বস্তিবাসীকে সচেতন করে। প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের জন্য এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর জিন্স এর পুনঃব্যবহার নিশ্চিতের লক্ষ্যে তারা উদ্ভাবন করে “মাল্টি লেয়ার ইকো ফ্রেন্ডলি ব্যাপগ”। উদ্ভাসিনী টিমের অন্যতম সদস্য সিফাত শাহারিয়ার কিয়াম এর সাথে কথা বলে জানা যায়, মাল্টি লেয়ার ইকো ফ্রেন্ডলি ব্যাগ এবং নকশিকাঁথা তৈরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবার উদ্দেশ্যে তারা পৃথক পৃথক ওয়ার্কশপের আয়োজন করেন যেখানে বস্তির নারীরা ট্রেইনারের থেকে হাতে কলমে সবকিছু শেখার সুযোগ পায়। এছাড়া নারীদের পিঠা বানানোর দক্ষতাকে অর্থ উপার্জনের উৎস হিসেবে তৈরি করার জন্য উদ্ভসিনী টিমের সদস্যরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্টল স্থাপন করে মাল্টি লেয়ার ইকো ফ্রেন্ডলি ব্যাগ,নকশিকাঁথার পাশাপশি নানা রকমের সুস্বাদু পিঠা বিক্রি করে। ক্যাম্পাসে নারীদের তৈরি পিঠা বিক্রির ক্ষেত্রে তারা পলিব্যাগের পরিবর্তে কলার পাতা ব্যবহার করে যা গ্রাহকদের নিকট খুবই আকর্ষণীয় ছিল। উদ্ভসিনী টিমের সদস্য সিফাত শাহারিয়ার কিয়াম বলেন, ” আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো বাস্তুচ্যুত অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর নারীদের স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করা এবং নারীদের প্রশিক্ষিত করে বাণিজ্যিকভাবে পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরির মাধ্যমে পরিবেশের উন্নয়নে সমষ্টিগতভাবে কাজ করা। আমরা এমন একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চায় যার ফলে যেমন পরিবেশের উন্নয়ন হবে তেমনি অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে “।
ভদ্রা বস্তিতে বসবাসকারী নারী জেরিনা বেগম জানান, উদ্ভাসিনী টিম কতৃক আয়োজিত ওয়ার্কশপের ফলে তারা পুরোনো কাপড়, জিন্স ব্যবহার করে আকর্ষণীয় ব্যাগ তৈরি করতে এবং নকশীকাঁথায় নতুন ডিজাইন করতে শিখেছেন। উদ্ভসিনী টিমের তরুণ তরুণীদের সাথে কাজ করে বস্তির নারীরা দারুন উচ্ছ্বসিত।