
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাতিল মতবাদের সাথে কোনো জোট করা হবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ। মওদূদী ১৯৪১ সালে বাতিল আক্বিদা নিয়ে জামায়াতে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমরা ১৯৪১ সালের মওদূদীর ইসলাম মানি না। আমরা দেড় হাজার বছর আগের মদিনার ইসলাম মানি। মওদূদী পবিত্র কোরআন ও হাদিসের ভুল ধরে ভ্রান্ত মতবাদ ছড়িয়েছেন। এদেশে পীর মাশায়েখ আলেম ওলামাদের মাধ্যমেই ইসলাম এসেছে। হকপন্থী ইসলাম প্রিয় জনগণ কোনো ভ্রান্ত মতবাদের ধোঁকাবাজিতে পড়বে না। আজ রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলনে দেশের শীর্ষ আলেম ওলামাগণ এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। দলের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দির সঞ্চালনায় উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন।
সম্মেলনে শীর্ষ উলামায়ে কেরামের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আল্লামা শায়খ জিয়া উদ্দীন, দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর মহাপরিচালক মাওলানা খলীল আহমদ কুরাইশী, আল-জামেয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার মহাপরিচালক মাওলানা আবু তাহের নদভী, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী, পীর সাহেব জৈনপুরের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাওলানা আব্দুর রহিম, বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মাওলানা আরশাদ রহমানী। জাতীয় উলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে ১৩ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়।
প্রস্তাবসমূহ হচ্ছে,ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি বাতিল করতে হবে। আজকের সম্মেলন মনে করে, এই চুক্তির ফলে ইসলামী মূল্যবোধ ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়বে, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরে ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে,রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ঘুচাতে এবং জনমতের প্রতিফলন ঘটাতে ঘোষিত সময়ের মধ্যেই জাতীয়নির্বাচনের সকল আয়োজন সম্পন্ন করতে হবে। সাথে সাথে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে ও প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করতে হবে; রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগ ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে হবে, শরীয়ার সীমারেখার আলোকে নারী সমাজ অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
একই সাথে বিতর্কিত নারী কমিশনের প্রস্তাবনা বাতিল করতে হবে, সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডারসহ ইসলামবিরোধী সকল পরিকল্পনা বন্ধ করতে হবে, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড, ২১ সালের মোদীবিরোধী আন্দোলন এবং ২৪ এর গণহত্যার বিচার তরান্বিত করতে হবে, সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ধর্মঅবমাননা রোধে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে, অন্তর্বর্তী সরকারকে যে কোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি সাধন করতে হবে, গাজায় গণহত্যা বন্ধ এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, পার্বত্য অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা বন্ধ করতে হবে, কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে এবং সকল প্রকার জুলুম, বৈষম্য, চাঁদাবাজি ও মসজিদ-মাদরাসা দখল করার অপরাজনীতি বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।,