
বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সভাপতি প্রার্থীসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজন সাংবাদিকও রয়েছেন। রোববার (৩ আগস্ট) বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের সন্নাসী বাজার এলাকায় এই সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র ও বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কয়েক মাস ধরে সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদার ও সাজারুল ইসলাম সাজুর অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (২ আগস্ট) রাতে বেতবুনিয়া এলাকায় সাজুর সমর্থক ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকসহ ১১ জনকে মারধরের অভিযোগ ওঠে আলিমপন্থীদের বিরুদ্ধে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে বাগেরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে রোববার বিকেলে সাজারুল ইসলাম সাজু ও শামীম হাসান পলকের সমর্থকরা পুলিশের অনুমতিতে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। কিন্তু কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগেই প্রতিপক্ষের লোকজন সেখানে অতর্কিত হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এতে সভাপতি প্রার্থী সাজুসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সাজুর সমর্থকেরা আলিম হাওলাদারের বসতবাড়ি ও সন্নাসী বাজারের অন্তত ২০টি দোকান ভাঙচুর করেন।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সন্নাসী বাজার এলাকায় দেখা যায়, পুলিশের উপস্থিতিতেই দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ছাদ থেকে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়, বাজারের বিভিন্ন দোকানে চলে ভাঙচুর। রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন। পরে সন্ধ্যার আগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তিনি বলেন, “উভয়পক্ষ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”
সাবেক যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, “সাজারুল ইসলাম সাজু ও শামীম পলকের জনপ্রিয়তায় প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ আতঙ্কিত হয়ে নির্বাচন বানচাল করতে হামলা চালিয়েছে। সাবেক ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মিঠু ও মজনুর নেতৃত্বে এ হামলা হয়।”
ছাত্রদল নেতা রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “পুলিশের সামনেই আব্দুল আলিমের লোকজন অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে।”
আহত সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রতিপক্ষ অতর্কিত হামলা চালায়, আমাদের বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।”
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও আব্দুল আলিম হাওলাদার ফোন রিসিভ করেননি।