
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে বৈধ ও অবৈধভাবে প্রায় ১৯ হাজার ভারতীয় নাগরিক বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, এর মধ্যে বৈধভাবে অবস্থান করছেন ১৩ হাজার ৫৩৬ জন এবং অবৈধভাবে বসবাস করছেন প্রায় পাঁচ হাজার ভারতীয়। তারা বিদ্যুৎকেন্দ্র, গার্মেন্টস, সড়ক উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত।
গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে অনেক বিদেশি নাগরিক জরিমানা দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন। তবে এখনো ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে দেশে অবস্থান করছেন সাত হাজার ৩০৯ জন বিদেশি, যার মধ্যে ভারতীয় নাগরিকের সংখ্যা চার হাজার ৯৯৭ জন। এছাড়া রয়েছেন চীনের ৬০৯, নেপালের ৩৭৬, পাকিস্তানের ১৪০, ফিলিপাইনের ১২৭, শ্রীলংকার ১২০ এবং অন্যান্য দেশের ৯৪০ জন নাগরিক।
জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে প্রায় ৪০ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে অতিবাসের কারণে ৭৬৭ জন জরিমানা দিয়েছেন ২১ কোটি টাকার বেশি এবং আয়কর বাবদ আদায় হয়েছে ১৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। চীনা নাগরিকদের কাছ থেকেই আয়করের বড় অংশ সংগৃহীত হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের সবসময় নজরদারিতে রাখা হয়। তারা অপরাধে জড়িত হলে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়। শিগগিরই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান জোরদার করা হবে।
নিয়ম অনুযায়ী, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রথম ১৫ দিন প্রতিদিন ১ হাজার টাকা, পরবর্তী ৯০ দিন প্রতিদিন ২ হাজার টাকা এবং ৯০ দিনের বেশি হলে প্রতিদিন ৩ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে বিদেশি নাগরিকরা দেশে অবস্থান করতে পারেন। জরিমানা প্রদানের পর তারা দেশ ত্যাগের সুযোগ পান।
গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, নাইজেরিয়ার কিছু নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশের পর পাসপোর্ট নষ্ট করে ফেলেছে। তারা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বসবাস করছে। এদের বিরুদ্ধে শিগগিরই জোরালো অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম বলেন, অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের বিষয়ে কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।