
শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (বাঁশখালী হাসপাতাল) চিকিৎসা অবহেলা ও নার্স-স্টাফদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে এক নবজাতকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। জান্নাতুন নাইমা (২১) নামের এক প্রসূতি ২৭ জুলাই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ডেলিভারি জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
পরিবারের দাবি, রোগীর ব্যথা ও সংকট বাড়লেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ “সব কিছু ঠিক আছে” বলে আশ্বস্ত করে বারবার। সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে সন্তান প্রসবের পর দেখা যায় নবজাতকের কোনো নড়াচড়া নেই, কান্নাও করে না। প্রায় ১৫ মিনিট পর খিচুনির মতো অস্বাভাবিক অবস্থা দেখা দিলেও নার্সরা সেটিকে কান্না বলে চালিয়ে দেন। পরে শহরের হাসপাতালে রেফার করা হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, জন্মের সময় অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগে শিশুর মস্তিষ্কের টিস্যু মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিশুটি প্রায় ৩০ ঘণ্টা আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে মারা যায়।
রোগীর দেবর সাহাদাত হোসাইন বলেন, “বারবার জিজ্ঞেস করা হলেও নার্সরা বিরক্ত হতো, ঠিকভাবে উত্তর দিত না। বাচ্চার মাথা বের করার সময় বারবার ব্যর্থ হচ্ছিল, পরে পেট চেপে টেনে বের করা হয়। এরপর বলে শহরে নেন। তাদের গাফিলতি ও আচরণ দুটোই অমানবিক।”
রোগীর সঙ্গে থাকা তার মা বেবি আক্তার ও শাশুড়ি তৈয়বা খাতুনও নার্সদের খারাপ ব্যবহার ও দিশেহারা আচরণের অভিযোগ করেন।
নিহত নবজাতকের মা জান্নাতুন নাইমা বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের পূর্ব বড়ঘোনা গ্রামের সুফিয়া বড়ি পাড়ার বাসিন্দা।
ঘটনার বিষয়ে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমা আক্তার বলেন,“ঘটনার বিস্তারিত আমার জানা নেই। আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। আমি এ বিষয়ে খবর নিচ্ছি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভুক্তভোগী পরিবার দাবি করেছে, দায়ী চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে এমন প্রাণঘাতী অবহেলা আর না ঘটে। স্টাফ-নার্সদের ব্যবহারের বিষয়টিও দেখার জন্য বলেন তারা।