
নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশি লাঠিচার্জ ও বাধা উপেক্ষা করে ফের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ)-এর শিক্ষার্থীরা। শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর নতুনবাজার মোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন তারা। পুলিশের হস্তক্ষেপে সরিয়ে দেওয়া হলেও কিছুক্ষণ পর আবারও আন্দোলনে ফিরে এসে রাস্তায় শুয়ে প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবি, অনৈতিক ও একতরফাভাবে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। এসব বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারসহ প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে হবে। ১৩ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ শুরু করলে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ। বেলা ১১টার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের সরাতে লাঠিচার্জ করে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এ সময় পুলিশের হামলায় তিনজন শিক্ষার্থী আহত হন। তবে আন্দোলন থেমে থাকেনি; তারা পুনরায় রাস্তার ওপর শুয়ে পড়েন এবং বিভিন্ন স্লোগানে মুখর করে তোলেন এলাকা।
প্রতিবাদী স্লোগানগুলো ছিল— ‘হয় বহিষ্কার যাবে, না হয় লাশ যাবে’, ‘অথরিটি স্বৈরাচার, এবার তোরা গদি ছাড়’, ‘বহিষ্কার প্রত্যাহার করতেই হবে’, ‘১ ২ ৩ ৪, প্রাইভেট সংস্কার’ ইত্যাদি।
ভাটারা থানার ওসি রাকিবুল হাসান বলেন, “প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখায় ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনার চেষ্টা করি। কিন্তু তারা সরতে রাজি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।”
ইউআইইউ শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও যৌক্তিক ১৩ দফা দাবিতে আন্দোলন চলছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলোচনায় না এসে বরং দমনমূলক ব্যবস্থায় গেছে। ২ জুন ৪১ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়, যার মধ্যে ২৪ জনকে স্থায়ী, ১৬ জনকে সাময়িক বহিষ্কার এবং একজনকে সতর্ক করা হয়।
জানা যায়, ২৬ ও ২৭ এপ্রিল ক্যাম্পাসে উত্তেজনার পর উপাচার্যসহ ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। পরদিন ২৮ এপ্রিল কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে। ২০ মে থেকে অনলাইন ক্লাস চালু হলেও তা প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীরা সরাসরি ক্লাস ও প্রশাসনিক সংস্কারের দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।