
নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল নগরীর আওয়ামী লীগ নেতা কাজী মফিজুল ইসলাম কামালের বিরুদ্ধে ঐতিহ্যবাহী বিউটি কমপ্লেক্স দখল ও মালিকপক্ষকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৪০ কোটি টাকা মূল্যের এ সম্পত্তি তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন বলে দাবি বর্তমান মালিক আশিক চৌধুরীর। তবে কাজী কামাল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি বৈধ চুক্তির ভিত্তিতেই উন্নয়ন কাজ করেছেন এবং বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন।
অভিযোগের বিবরণ
সূত্র জানায়, বরিশাল নগরীর বিউটি সিনেমাসহ প্রায় ৫৪ শতাংশ জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা বিউটি কমপ্লেক্সের মধ্যে ১৫ শতাংশে মালিক জুলফিকার উদ্দিন চৌধুরীর বসতবাড়ি রয়েছে। বাকি প্রায় ৩৯ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়।
আশিক চৌধুরীর অভিযোগ, ২০১৮ সালে তিনি বিদেশে অবস্থানকালে তার বাবাকে প্রভাবিত করে কাজী কামাল অপ্রত্যাহারযোগ্য একটি পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নেন। ওই পাওয়ার অনুযায়ী যৌথ মালিকানার কথা থাকলেও পরবর্তীতে প্রতারণার মাধ্যমে ভবনের বেশিরভাগ মালিকানা নিজের নামে লিখে নেন তিনি। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের পরিবার হয়রানির শিকার হয় বলে অভিযোগ আশিকের।
তিনি দাবি করেন, এ পর্যন্ত তার ও স্ত্রী আমেনা বেগম সুমীর বিরুদ্ধে মোট ৩৩টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে ১১টিতে তারা খালাস পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলো এখনো চলমান। আশিকের অভিযোগ, কমপ্লেক্স পুনর্দখলের চেষ্টা করতে গিয়ে তার স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাও ঘটেছে, যার লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।
আইনি প্রক্রিয়া
আশিক জানান, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বাতিলে একাধিক নোটিশ দেওয়ার পর ২০২১ সালে আদালতে মামলা করা হয়। এরপর তার বাবা পুরো জমি আশিকের নামে দলিল করে দেন। বর্তমানে বিষয়টি বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
কাজী কামালের বক্তব্য
অভিযোগ অস্বীকার করে কাজী কামাল বলেন, “পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পন্ন করার সময় আশিকের বাবাকে প্রায় ৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ভবন নির্মাণে আরও ৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এই ১০ কোটি টাকা ফেরত দিলে আমরা সম্পত্তি ছেড়ে দেব। আদালত পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বাতিল না করা পর্যন্ত মালিকানা বৈধ থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে মামলার অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তার কোনোটির বাদী আমি নই। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কোনো সুবিধাও নেইনি। আমি একজন ব্যবসায়ী হিসেবে বৈধ চুক্তির ভিত্তিতেই কাজ করেছি।”