
ডেস্ক রিপোর্ট: চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিকৃত ছবি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াত কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহতদের চাঁদপুর ও হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের পালিশারা গ্রাম ও বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষ ঘটে।,
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও পালিশারা শাহমিরান মিরা বাড়ি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইলিয়াস হোসেন গত বৃহস্পতিবার রাতে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার বিকৃত ছবি শেয়ার করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
পরে ইলিয়াস হোসেন পোস্টটি মুছে দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। শুক্রবার সকালে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে বৈঠকের উদ্যোগ নেয়া হলেও বৈঠকের আগেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সকাল ১০টার দিকে সাবেক উপজেলা যুবদলের সদস্য নেছার আহমেদ চৌধুরী ও সাবেক ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জামায়াত নেতা ইলিয়াস হোসেনকে জিজ্ঞেস করতে গেলে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব কাজী জসিম বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু অতর্কিতভাবে জামায়াত কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’
অন্যদিকে, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা মোজাম্মেল হোসেন মজুমদার পরাণ অভিযোগ করে বলেন, ‘ইলিয়াস হোসেন পোস্ট ডিলিট করে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। এরপরও বিএনপি নেতারা বৈঠকের আগে হামলা চালায়। এতে আমাদেরও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।’
স্থানীয় জামায়াতের পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়, নির্ধারিত বৈঠকের আগে অন্য গ্রাম থেকে ভাড়া করা লোক এনে বিএনপি পালিশারা গ্রামে মব তৈরি করতে চেয়েছিল। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির হাফেজ আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘এটি ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঘটেছে। তবে বিএনপি পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা করেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।’
আহত বিএনপি কর্মীরা হলেন: নেছার আহমেদ চৌধুরী, সাইফুল মিজি, আনোয়ার হোসেন সর্দার, কামাল হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, কুদ্দুস সর্দার, মহসিন হোসেন তুষার, রাসেল ভূঁইয়া, লিটন হোসেন, আলামিন হোসেন, রাসেল হোসেন, মহিন হোসেন, জনি হোসেন, আব্দুর রহিম, নূর হোসেন, মেহেদী হাসান, স্বপন ও ফয়সাল।
আহত জামায়াত কর্মীরা হলেন: হাফেজ মো. আব্দুল মোতালেব, হাফেজ মো. ইলিয়াস হোসেন, ফরিদুল ইসলাম, হাফেজ আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, ফয়সাল হোসেন, রাশেদ হোসেন, সজিব হোসেন, শরীফ পাটওয়ারী, রাজু ও শামীম হোসেন।
সংঘর্ষ চলাকালে পালিশারা বাজারের দোকানপাট কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকা শান্ত রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে, ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষের ঘটনায় হাজীগঞ্জের দুপক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।,











