
জেলা প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মারিয়া খাতুন নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পারিবারিক কলহের জের ধরে তাকে হত্যার পর স্বামী মুস্তাফিজুর রহমান নয়ন পালিয়েছে। এক বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন তারা।
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে উপজেলার পচামাদিয়া এলাকায় স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। রাতে খবর পেয়ে সকালে ৮টায় ঘটনাস্থলে যান দৌলতপুর থানার পুলিশ। এরপর নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
নিহত মারিয়া খাতুন (১৮) দৌলতপুর উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের ভেড়ামারা গ্রামের মৃত মশিরুল ইসলামের মেয়ে। তিনি তেলিগাংদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত মুস্তাফিজুর রহমান নয়ন (২০) একই উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের পচামাদিয়া গ্রামের আমাদুল ইসলামের ছেলে। তিনি গতবছর একই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছে। স্কুলে পড়াকালীন অবস্থায় নয়ন ও মারিয়ার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। এরপর এক বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের দিয়ে হয়।
নিহত মারিয়ার মামা আশিকুল ইসলাম বলেন, তেলিগাংদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াকালীন
অবস্থায় প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক করে নয়ন ও মারিয়া। এরপর এক বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী নয়ন মারিয়াকে মারপিট করে হত্যা করেছে। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হত্যার পর নয়ন পালিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে নয়ন ও তার পরিবারের সদস্যরা জড়িত। সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
নিহত মারিয়ার চাচা টুটুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম বলেন, গত বৃহস্পতিবার মারিয়ার বাবার বাড়ি থেকে মারিয়াকে নিয়ে যায় তার স্বামী নয়ন। এর আগে ভেড়ামারায় বাবার বাড়িতে ছিল মারিয়া। শুক্রবার রাত ১২টায় নয়নের প্রতিবেশীর মাধ্যমে ফোনে আমরা খবর পায় মারিয়া মারা গেছে। তারপর তাৎক্ষণিক আমরা সবাই ভেড়ামারা থেকে পচামাদিয়া গ্রামে নয়নের বাড়িতে যায়। গিয়ে দেখি বিছানার উপর তার মরদেহ রাখা। তার লাশ ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।
তারা আরও বলেন, আমরা মারিয়ার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। তাকে মারপিট করে হত্যা করা হয়েছে৷ রাত ১২টায় পুলিশকে বিষয়টি জানায়। তারা রাতে আসেননি। সকাল ৮টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এরপর মর্গে পাঠানো হয়। আমরা মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেন নি। তারা বলেছে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মামলা নিবে। মারিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। জড়িতদের ফাঁসি চাই।
এবিষয়ে অভিযুক্ত নয়ন ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের পাওয়া যায়নি৷
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান শেখ বলেন, খবর পেয়ে শনিবার সকালে মরদেহ উদ্ধার করে ময়য়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ এ ঘটনায় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।