
নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘প্রহসনের নির্বাচন পরিচালনা’র অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (২৩ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান এই আদেশ দেন।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামসুজ্জোহা সরকার আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, নূরুল হুদা ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে একাধিক গুরুতর অনিয়ম ও সংবিধান লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত ছিলেন। তিনি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দেশের গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা বিপন্ন করেন। মামলায় মোট ১১টি কারণ দেখিয়ে তার রিমান্ড আবেদন করা হয়।
রিমান্ড আবেদনে যেসব গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে:
একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারা;
প্রশাসনকে একপক্ষের পক্ষে ব্যবহার ও সংবিধান লঙ্ঘন;
দিনের ভোট রাতে সম্পন্ন করার ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা গেজেট প্রকাশ;
জনগণের ভোটাধিকার হরণ এবং তরুণদের ভোট বিমুখ করা;
নির্বাচনী দুর্নীতির মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ ও ফলাফল প্রভাবিত করার অভিযোগ;
পাতানো নির্বাচনের নেপথ্য কারিগরদের তথ্য উদঘাটন;
মামলার পলাতক ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের শনাক্তকরণ।
পুলিশ জানায়, তদন্তের স্বার্থে নূরুল হুদাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন, যাতে নির্বাচনী অনিয়ম ও জড়িতদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে।
বিকেল সোয়া ৩টার দিকে নূরুল হুদাকে আদালতে হাজির করা হয় এবং ৪টা ১০ মিনিটে তাকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। পরে আদালত তাকে চার দিনের রিমান্ডে পুলিশের জিম্মায় পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলাটি জাতীয় নির্বাচনী ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত একটি ইস্যু হিসেবে দেখা হচ্ছে।