
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার পূর্বাচল উপশহরের পাশে আবাসন প্রকল্পের জন্য ৩১৪ বিঘা জমি ক্রয় করেছে বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড। সমিতি প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রতি প্লটে উন্নয়ন ফি হিসেবে প্রায় ৪ লাখ টাকা গ্রহণ করছে। এছাড়া জমির শেয়ার এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচও রয়েছে।
সমিতিটি ‘অলাভজনক প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে করের বিশেষ সুবিধা চেয়েছে। তাদের দাবি, এতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হলেও জমি রেজিস্ট্রেশন খরচ কমবে। পাশাপাশি জমির শ্রেণি পরিবর্তনের মাধ্যমে হস্তান্তরের খরচও কমানোর আবেদন করা হয়েছে। সম্প্রতি এই বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সমিতির জমি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে করহার আবাসন কোম্পানির মতো হবে কি না—সেটি এখনও নির্ধারিত হয়নি। তিনি উল্লেখ করেছেন, আইনসঙ্গত ব্যাখ্যার বাইরে কোনো সুবিধা দেওয়া যাবে না।
তদন্তে দেখা গেছে, সমিতি পূর্বাচল ও খিলক্ষেত এলাকায় গ্রিনভ্যালি এবং খিলক্ষেত আবাসন প্রকল্পের প্লট শেয়ার আকারে বিক্রি করছে। প্রতিটি মৌজায় দলিলমূল্য ও উন্নয়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মস্তুল মৌজায় ১৬ শতাংশ জমির দলিলমূল্য ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, রেজিস্ট্রেশন ফি ৩৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ফি ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, আইন অনুযায়ী এনবিআরের কর আদায়ের দায়িত্ব রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমিতির কর সুবিধা চাওয়া আইনত সাংঘর্ষিক। যদি প্রশাসন ক্যাডারের আবাসনে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়, ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠতে পারে।’
বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে এনবিআরের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, জমিতে কোনো উন্নয়ন কাজ করা হয়নি এবং উৎসে কর ও অগ্রিম আয়কর আরোপিত হলে দ্বৈত কর দিতে হতে পারে। এছাড়া জমি হস্তান্তরে ভ্যাট এবং করহার বিষয়েও স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান বলেছেন, বিষয়টি এবারের আয়কর আইন ও পরিপত্র অনুযায়ী বিবেচনা করা হবে। সমিতির সভাপতি সাবেক সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার এখনও কোনো মন্তব্য করেননি।