
বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী প্রায় দশ হাজার জনগোষ্ঠির একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ‘৩৫ নম্বর পূর্ব ইলশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ এর প্রধান শিক্ষক বদরুদ্দীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে স্কুলের অবকাঠামোগত সংস্কারের বরাদ্দ আত্মসাৎ, সেচ্ছাচারিতা, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে।
স্থানীয় সচেতন মহল অভিযোগ করে বলেন, ‘ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বদরুদ্দীন চৌধুরী ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা এবং লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছে। তিনি পেশাদার শিক্ষক না হয়ে, হয়ে উঠেছেন পেশাদার রাজনীতিবিদ। শিক্ষকদের আগমন প্রস্থানের হাজিরা বহি সংরক্ষণের তোয়াক্কা করতেন না। খেয়াল খুশি মতো দুপুর ১২ টায় এসে এক/দেড় ঘন্টা থেকে চলে যেতেন। নিয়মিত অনুপস্থিত থেকে পরে হাজিরায় সাইন করে নিতেন। সরকারী পদে থেকে রাজনৈতিক নেতাদের লেজুড়বৃত্তি করে নিজের ক্লাসও স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের উপর চাপিয়ে দিতেন এবং তাদের সাথেও দুর্বব্যবহার করতেন। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীর সামনে অফিসে বসে সিগারেট সেবন করতেন, চিষ্টাচার বর্হিভূত আচরণ ও রাজনৈতিক আড্ডা বসাতেন স্কুলে।
সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক তিন বছর অন্তর বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি করার নির্দেশনা থাকলেও বিগত ২০ বছর আগে করা গায়েবী কমিটির সভাপতিকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচন ছাড়া পুনঃনির্বাচিত করে পরস্পর যোগসাজশে স্কুলের বরাদ্ধ (বার্ষিক সংরক্ষণ, SLIP, ওয়াশরুম ব্লক মেরামত সহ অন্যান্য বরাদ্ধ) আত্মসাৎ করে করে আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ না করে বই খাতা বিক্রির মতো অভিযোগও উঠেছে।
এমনকি বিগত প্রায় ৬ বছর প্রধান শিক্ষক পদে থেকে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের অন্যতম বাধা ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা সমাধানের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, বরং বিদ্যালয়ের নামে ৩৪ শতাংশ জায়গা দানপত্র দলিল থাকা স্বর্ত্বেও নামজারীর উদ্যোগ না নিয়ে ভূমি দাতার ওয়ারিশদের সাথে আপোষ করে নিজের দুর্নীতি ও অনিয়ম ধামাচাপা দেওয়ারও অভিযোগ আছে। তিন মাস অন্তর অন্তর অভিভাবক সমাবেশের নির্দেশ থাকলেও তার কোনো অস্থিত্ব ছিলো না। তার দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বললে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নানাভাবে লোকজনকে হেনস্থা ও হুমকি ধমকি দিতেন।
ওই প্রধান শিক্ষকের উদাসীন্যতার কারনে ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয় এখনো বিদ্যুৎবিহীন অন্ধকারে নির্মজ্জিত। যার দরুণ রাতের আঁধারে স্কুলে মাদক সেবন, জুয়ার আড্ডা চলে। পানির নলকূপ থাকলেও তা সারা বছর নষ্ট থাকে। বিদ্যালয়ের নানা সমস্যা সমাধানে তার নীরব ভূমিকা ও উদাসিন্যতাকে দোষীয়েছেন এলাকাবাসী।
আগামী দশ কর্মদিবসের মধ্যে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বদরুদ্দীন চৌধুরীকে অপসারণ ও তদন্তপূর্বক পূর্বের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংশ্লীষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিভাগীয় ব্যবস্থাগ্রহণের এবং সচেতন অভিভাবকদের সমন্বয়ে সরকার ঘোষিত এডহক কমিটি গঠন পরবর্তী বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের দাবী জানান স্থানীয় সচেতন ও অভিভাবক মহল।
এ বিষয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বদরুদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ সত্য নয়। আপনি (প্রতিবেদক) একদিন স্কুলে এসে সবকিছু দেখে যান। আপনি আসলে আমি কি কাজ করেছি তা দেখতে পাবেন।