নিজস্ব প্রতিবেদক: বেনজীর আহমেদের ঘটনার পর সারা দেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সরকার নতুন করে দুর্নীতিবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে। দুর্নীতির ব্যাপারে হার্ড লাইনে গেছে সরকার। আর এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও শুরু হয়েছে শুদ্ধি অভিযান।'
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আজ এক দিনে দুইজনের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলেই অনেকে মনে করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব গাজী হাফিজুর রহমানের সাথে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। গাজী হাফিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ছিলেন। আগামী পয়লা জুন থেকে তার চুক্তি বাতিল করা হয়েছে মর্মে আজ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, একই দিনে আরেক আদেশে প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষারের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও পয়লা জুন থেকে বাতিল হয়েছে। তুষার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের পিছনে কি কারণ রয়েছে তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে।'
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে বিতর্ক মুক্ত করার জন্য এবং কোন রকম অনিয়ম, দুর্নীতি বা স্বেচ্ছাচারীতাকে প্রশ্রয় না দেওয়ার জন্যই প্রধানমন্ত্রী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে হাসান জাহিদ তুষারের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে তার ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক বিরোধের কারণে। তার সম্পর্কে তার স্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে গুরুতর অভিযোগ করেছেন এবং সেই অভিযোগ গুলোর সততা যাচাই করে প্রমাণ হওয়ার প্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রী এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।'
অন্যদিকে গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো কারণ জানা যায়নি। তবে এই দুটি শেষ নয় এমনটাই মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে, স্বচ্ছ এবং একটি দুর্নীতি মুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার অংশ হিসেবেই এই শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ শেষ হচ্ছে। নতুন করে তার চুক্তির নবায়ণ হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আরও বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যেতে পারে বলেও একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করেছিল এবং দুর্নীতি প্রতিরোধকে অগ্রাধিকার ক্ষেত্র হিসেবে জানিয়েছিল। আর তার অংশ হিসেবে নির্বাচনের পর দুর্নীতিবিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশের সাবেক প্রধান বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তার বিভিন্ন সম্পত্তি জব্দ করা হচ্ছে। এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শুদ্ধি অভিযান নতুন করে দুর্নীতিবিরোধী বার্তা দিল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.