
স্টাফ রিপোর্টার: মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে ২৫ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন ও এর মধ্যে ২০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় নতুন করে আলোচনায় এসেছে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে এ অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ঋণগ্রহীতার আর্থিক সক্ষমতা যাচাই, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা গুদাম পরিদর্শন ছাড়াই জামানতবিহীনভাবে এ ঋণ অনুমোদন করা হয়। পরে অর্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে ‘লেয়ারিং’ করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
তদন্তে জানা যায়, অনুমোদিত ২৫ কোটি টাকার ঋণের মধ্যে ২০ কোটি ৫২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়, যা পরবর্তীতে অন্য ঋণ পরিশোধ ও অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে গোপন রাখা হয়।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সাদ মুসা গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ মোহসিন, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী, মাহমুদ সাজিদ কটন মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান শামীমা নারগিস চৌধুরী এবং সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক পরিচালক।
এছাড়াও, আলোচিত পিকে হালদারসহ (প্রশান্ত কুমার হালদার) একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা, যেমন বেলাল আহমেদ, গোলাম মোহাম্মদ, ড. মোহাম্মদ ফারুক, আরিফ আহমেদ, ওসমান গণি, মায়মুনা খানম, সরোয়ার জাহান মালেক, মোস্তান বিল্লাহ আদিল, শাহানা ফেরদৌস, সাজেদা নূর বেগম, বোরহানুল হাসান চৌধুরী, কুতুবউদ্দৌলা, সলিমউল্লাহদের নাম মামলায় রয়েছে।
এছাড়া, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা—অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম সারওয়ার, হেড অব ক্রেডিট মোহাম্মদ মাহমুদ আলম, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাজী মশিউর রহমান জাহেদসহ চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখার পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে।
দুদক মহাপরিচালক জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২)(৩) ধারা অনুযায়ী মামলা করা হচ্ছে।
ভারতে পলাতক পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তাকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।