
অনলাইন ডেস্ক: পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি বুধবার দক্ষিণ এশিয়ায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টাকে ভারত নস্যাত করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবি করেন, পাকিস্তান আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধানে আগ্রহী।
২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে ভারতের সাথে পাকিস্তানের টানাপোড়েন চলছে। তারই প্রেক্ষাপটে এ মন্তব্য করলেন বিলাওয়াল। দিল্লি প্রমাণ ছাড়াই ইসলামাবাদকে হামলাকারীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগে ৭মে পাকিস্তানে হামলা চালায়। ১০মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই যুদ্ধের ইতি টানে দেশ দুটি।
এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বিলাওয়ালের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করছে। এরই অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সফরের পর তারা বর্তমানে যুক্তরাজ্যে রয়েছে। এরপর তারা ইউরোপীয় কমিশনের সদস্যদের সাথে আলোচনার জন্য বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে যাবে।,
লন্ডনে পাকিস্তান হাইকমিশনে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিলাওয়াল বলেন, ‘ভারত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করতে চায়, কিন্তু তাদের চেষ্টা সফল হবে না। প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে আলোচনার টেবিলে টেনে আনবে। ভারতের সাথে সাম্প্রতিক সংঘাত কাশ্মীর বিরোধকে একটি বৈশ্বিক ইস্যুতে পরিণত করেছে। যদিও নয়াদিল্লি এটিকে অভ্যন্তরীণ বিষয় বলার চেষ্টা করেছে।‘
তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধের সময়, কূটনৈতিক ফ্রন্টে কাশ্মীরের বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, কাশ্মীরের বিষয়ে মধ্যস্থতা করা উচিত। কাজেই বিষয়টি এখন একটি বৈশ্বিক সমস্যা। ভারতকে মেনে নিতে বাধ্য করা হয়েছে যে কাশ্মীর শুধুই একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয় নয়।‘
তিনি বলেন, প্রতিনিধিদলটি ব্রিটিশ হাউস অফ কমন্সে সর্বদলীয় কাশ্মীর সম্মেলনের সদস্যদের সাথে একটি বৈঠক করেছে। যারা স্বীকার করেছে, কাশ্মীর একটি আন্তর্জাতিক ইস্যু। এবং তারা বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চায়।
বিলাওয়াল বলেন, ‘পাকিস্তান বিশ্বাস করে যে সংলাপের মাধ্যমে কাশ্মীর, পানি বা সন্ত্রাস-সব সমস্যার-সমাধান করা যেতে পারে। যুদ্ধ সমাধান নয়। ভারত মিথ্যা বলছে। আমরা প্রমাণ করেছি আমরা যুদ্ধের পাশাপাশি কূটনৈতিক ফ্রন্টেও ভারতকে পরাজিত করতে পারি। আমরা শান্তির কথা বলছি আর ভারত যুদ্ধের কথা বলছে।‘
এক প্রশ্নের জবাবে বিলাওয়াল বলেন, ‘সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত বা বাতিল করার কোনও অধিকার ভারতের নেই। পেহলগাম হামলার পর দিল্লি চুক্তিটি স্থগিত রেখেছে। চুক্তিটি এখনও অক্ষত। চুক্তি স্থগিত রাখার বিষয়ে ভারতের বিবৃতি সিন্ধু পানি চুক্তির লঙ্ঘন। এমনকি চুক্তি স্থগিত করার হুমকি দেওয়াও জাতিসংঘের সনদের লঙ্ঘন। ভারত এটি স্থগিত করলে আমরা একে যুদ্ধের চেষ্টা বলে ধরে নেব। সেক্ষেত্রে পরমাণু যুদ্ধের বাস্তবতাকেও অস্বীকার করা যায় না। ভারতকে অবশ্যেই চুক্তি স্থগিত রাখার বিষয়ে বিবৃতি প্রত্যাহার করতে হবে।‘