
পাকিস্তানে নিহত অন্তত ৩১, পাল্টা হামলায় কাশ্মীরে ১৫ ভারতীয়র মৃত্যু
ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে ৩১ জন নিহত হয়েছে। কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ পর্যটক হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহের মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এ অভিযানে নয়টি স্থানে হামলা চালানো হয়।
ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে ৩১ জন নিহত হয়েছে। কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ পর্যটক হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহের মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এ অভিযানে নয়টি স্থানে হামলা চালানো হয়। এ অভিযানে ভারত অবশ্য ৭০ পাকিস্তানিকে হত্যার দাবি করেছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় কাশ্মীরে ১৫ ভারতীয়র মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানিয়েছেন, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানের ৩১ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৫৭ জন। বিপরীতে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করার দাবি জানিয়েছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। যদিও ভারত বলছে, তাদের তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।
ভারতীয় হামলাকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ উল্লেখ করে পাকিস্তান তাদের সশস্ত্র বাহিনীকে পাল্টা জবাব দেয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে। টানা কয়েকদিনের মতো কাশ্মীর সংলগ্ন নিয়ন্ত্রণরেখায় উভয় পক্ষের মধ্যে গোলা নিক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ভারতের বিমান হামলায় নিহতদের প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নেয়া হবে। জাতির উদ্দেশে গতকাল দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘তারা কাপুরুষ, যারা নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালায় ও নিজেকে শক্তিশালী ভাবে। আমরা গত (মঙ্গলবার) রাতে প্রমাণ করেছি, পাকিস্তান জানে প্রতিরক্ষা করতে কীভাবে উপযুক্ত জবাব দিতে হয়।’
এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার আজ সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে। পাশাপাশি বেলা ১১টায় আহ্বান করা হয়েছে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটির (সিসিএস) বৈঠক। নরেন্দ্র মোদি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ‘অপারেশন সিঁদুর’ সম্পর্কে অবহিত করেন। রাষ্ট্রপতি ভবন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের এক পোস্টে এ কথা জানিয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, জাপান, ফ্রান্স, তুরস্কসহ নানা দেশ এবং জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের হামলাকে লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেছেন। উভয় পক্ষকে সংযত আচরণের পরামর্শ দিয়েছেন অন্য বিশ্বনেতারা।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ খানও জানিয়েছেন, তাদের সরকার ও সেনাপ্রধান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত যদি উত্তেজনা না বাড়ায়, তাহলে পাকিস্তান কোনো দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ নেবে না। ভারতের সরকারি দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র নালিন কোহলিও বলেছেন, কেউই যুদ্ধ চায় না। তবে ভারত তার নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষা থেকে বিরত থাকবে না।
নয়টি স্থানে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: ভারতের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর অবকাঠামো’ লক্ষ্য করে একটি সমন্বিত ও নির্ভুল সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। বুধবার প্রথম প্রহরে পরিচালিত এ অভিযানে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা অংশ নেন। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, কমপক্ষে নয়টি স্থানে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে ভারতের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী হামলার’ পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। অভিযানে ড্রোনসহ বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। পুরো অভিযানই ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে পরিচালিত হয়েছে। যেসব স্থানে হামলা চালানো হয়েছে, সেগুলো হলো মুজাফফরাবাদ, কোটলি, বাহাওয়ালপুর, রাওয়ালকোট, চাক্ষওয়ারি, ভিম্বার, নীলম উপত্যকা, ঝেলাম ও চাকওয়াল।
এনডিটিভি জানায়, বুধবার সকালে নয়াদিল্লিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এবং কর্নেল সোফিয়া কোরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং এসব তথ্য দিয়েছেন। অভিযানটি বিস্তৃত আকারে হলেও পাকিস্তানের কোনো সামরিক স্থাপনাকে নিশানা বানানো হয়নি। ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, অভিযানে ৭০-এর বেশি ‘সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তে নিহত ১৫: ভারতশাসিত কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। বুধবার প্রথম প্রহরে শুরু হওয়া এ গোলাবর্ষণে আরো অন্তত ৪৩ জন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে তারা। এর আগে পাকিস্তান জানিয়েছিল, ভারতের বিমান হামলা ও সীমান্তে পাল্টা গোলাবর্ষণে তাদের অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছে। দুই দেশের সেনাবাহিনীই দাবি করেছে, নিহতরা বেসামরিক নাগরিক, তাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের: গতকাল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দেশটির পার্লামেন্টে বলেছেন, তার দেশের সেনাবাহিনী ভারতের পাঁচটি বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে দুটি কাশ্মীরে এবং একটি ভারতের বাথিন্ডায় ভূপাতিত করা হয়েছে। পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছেন। এগুলোর মধ্যে তিনটি রাফাল যুদ্ধবিমান, অপর দুটির মধ্যে একটি এসইউ-৩০ ও মিগ-২৯। তবে পাকিস্তানের এ দাবি ভারতের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়নি।
বিবিসি জানিয়েছে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাম্পোর এলাকায় একটি বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। তবে এটি কাদের বা কী ধরনের বিমান তা শনাক্ত হয়নি। ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের ভূখণ্ডে বুধবার তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় সরকারের চার কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
সশস্ত্র বাহিনীকে পাল্টা জবাবের অনুমতি পাকিস্তানের: ভারতীয় হামলার জবাবে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে পাল্টা পদক্ষেপ নেয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটি হুঁশিয়ার করে বলেছে, সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন ও বেসামরিক লোকজনকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে সময়মতো ভারতের বিরুদ্ধে জবাব দেয়ার অধিকার রাখে তারা। গতকাল পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকের পর দেয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের হামলাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ উল্লেখ করে ইসলামাবাদ বলছে ‘উসকানিমূলক ও কাপুরুষোচিত’ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার সমুচিত জবাব দেয়া হবে।
সংযম প্রদর্শনের আহ্বান বিশ্বনেতাদের: দিল্লি-ইসলামাবাদকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামরিক অভিযানকে ‘লজ্জাজনক’ অভিহিত করে বলেন, ‘এটা হতাশার। মাত্রই এ খবর শুনেছি। আমার মনে হয়, অতীত ইতিহাসের ভিত্তিতে মানুষ বুঝতে পেরেছিল যে কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। তারা (ভারত-পাকিস্তান) অনেক, অনেক দশক ধরে লড়াই করছে। আশা করি, এটা খুব দ্রুত শেষ হবে।’
হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাতের ভার বিশ্ব বহন করতে পারে না।’ ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারট ভারত ও পাকিস্তানকে সংযম প্রদর্শন করতে বলেছেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক দ্বন্দ্ব নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান তিনি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও উভয় পক্ষকে সংযম দেখাতে বলা হয়েছে। উদ্বেগ জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ দুই পক্ষকে সংযম প্রদর্শন, উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। ভারতে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত রুভেন আজার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স পোস্টের এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইসরায়েল ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে।’
মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত: ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে চালানো বিমান হামলায় জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য ও চারজন ঘনিষ্ঠ সহকারী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি উর্দু। জইশ-ই-মোহাম্মদের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে বিবিসি উর্দু জানিয়েছে, বাহাওয়ালপুরের ‘সুবহান আল্লাহ কমপ্লেক্স’ নামের ঘাঁটিতে চালানো হামলায় আজহারের বড় বোন ও তার স্বামী, তার ভাগ্নে ও ভাগ্নের স্ত্রী, একজন ভাতিজি এবং পরিবারের পাঁচজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে মাসুদ আজহারের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও তার মা এবং আরো দুজন জইশ-সংশ্লিষ্ট নেতা প্রাণ হারিয়েছেন।
পাকিস্তানের আকাশসীমায় চলছে না উড়োজাহাজ: এদিকে পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলছে আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজগুলো। ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের আকাশসীমায় বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাত থেকে পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করছে না বেশির ভাগ বিদেশী বিমান সংস্থা। অন্যদিকে বুধবার ভোর থেকে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বেশ কয়েকটি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বহু উড়োজাহাজের ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। উড়োজাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অন্য পথে ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে।
পাকিস্তানের পাঞ্জাবে জরুরি অবস্থা: ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হাসপাতালসহ জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ গতকাল জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এছাড়া ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জম্মু, সাম্বা, কাঠুয়া, রাজৌরি এবং পুঞ্চ এলাকার স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা বিশ্লেষকদের: বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের হামলা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের পাল্টা হামলা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ভারতের অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল জেএস সোধি দি ইনডিপেনডেন্টকে বলেন, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণেই শেখানো হয় দ্রুত পাল্টা আঘাত কেমন হওয়া উচিত। এটা কখন হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। সরকার ও সেনাবাহিনী উভয়ের ওপরই অভ্যন্তরীণ চাপ আছে জবাব দেয়ার।’
বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যানের মতে, ‘এবার দুদেশই আরো বড় পরিসরে সামরিক শক্তি ব্যবহারে আগ্রহী। এটা পারমাণবিক অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে শান্ত রাখার মতো নয়। বরং এখন উভয় পক্ষ প্রচুর প্রচলিত অস্ত্র ব্যবহারেও পিছপা হচ্ছে না। তাতেই ঝুঁকি বাড়ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংকট্যাংক স্টিমসন সেন্টারের গবেষক ফ্র্যাঙ্ক ও’ডনেল বলেন, ‘উভয় রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা এখন যুদ্ধ শুরুর ঝুঁকি নিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তবে কোনো পারস্পরিক বোঝাপড়া না থাকলে এ উত্তেজনা দ্রুতই অনিচ্ছাকৃত পূর্ণমাত্রার সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি কতটা গভীর ও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, তা নির্ভর করছে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় কীভাবে দুই পক্ষ প্রতিক্রিয়া দেখায় তার ওপর। একপাশে রাজনৈতিক চাপ, অন্যপাশে সামরিক তৎপরতা—এর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে দক্ষিণ এশিয়ার ২০০ কোটির বেশি মানুষের ভাগ্য।’