
নিজস্ব প্রতিবেদক: গতকাল সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী রাজাকারদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু বক্তব্য রেখেছেন। কোটা সংক্রান্ত বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কটাক্ষ অবমাননার বিরুদ্ধেও সোচ্চার কণ্ঠে কথা বলেন। আর তার জের ধরে শিবির নিয়ন্ত্রিত কোটা আন্দোলনকারীরা গতকাল রাতে একযোগে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করে। এই বিক্ষোভ আজও অব্যাহত রয়েছে এবং এই বিক্ষোভের সঙ্গে আজ ছাত্রলীগ এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সহিংসতার খবরও পাওয়া গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।’
এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন গোষ্ঠী আজ কোটা সংস্কারের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট ভাবে অবস্থান ঘোষণা করেছে এবং ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। এর ফলে কোটা আন্দোলন একটি রাজনৈতিক আন্দোলনের দিকে রূপ পরিগ্রহ গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে কোটা আন্দোলনকারীদের অবস্থান একটি নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এর ফলে এই আন্দোলনকে রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলন হিসেবে এখন চিহ্নিত করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ কোটা আন্দোলনকে রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও এখন কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তারা বলেছেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিতে ছিল ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের আন্দোলনে কোনও বাধা দেওয়া হয়নি। কিন্তু গত রাত থেকে কোটা আন্দোলনের নামে যা শুরু হয়েছে তা চরম ও বিশৃঙ্খল এবং হঠকারিতা। এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে অন্যত্র।
এতদিন ধরে কোটা আন্দোলনের ব্যাপারে সরকার যে সহানুভূতি এবং নমনীয়তা প্রদর্শন করেছে, তার ফলাফল কি অন্যরকম হতে যাচ্ছে? এটি কি এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে? কারণ ইতিমধ্যে শিবিরের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এবং বিএনপির অর্থপুষ্ট হয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন সারা দেশে একটি সক্রিয় শক্ত নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। আর এই নেটওয়ার্কের ফলে কোটা আন্দোলনকারীদের আন্দোলন ক্রমশ বেগবান হচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে কতগুলো ভুল তথ্য এবং ভুল উপাত্ত দিয়ে প্রকারান্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে একটি সুস্পষ্ট অবস্থান তৈরি করতে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে। এর ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ এবং কোটা সম্পর্কে এক ধরনের নেতিবাচক অবস্থান তৈরি হয়েছে’।
কোটা আন্দোলন সম্পর্কেও মানুষের মধ্যে নানা রকম ভ্রান্ত এবং বিভ্রান্তিকর ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নাজুক অবস্থায় আছে। সারা ঢাকা শহরে তীব্র গ্যাসের সংকট, অর্থপাচার, দুর্নীতি নিয়ে মানুষের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি বিরাজ করছে। এর মধ্যে।শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলন বা সরকারকে চাপে ফেলার আন্দোলনে পর্যবর্ষিত করার চেষ্টা করছে। এখন যখন সারাদেশে কোটা আন্দোলনের একটি সংঘবদ্ধ অবস্থান তৈরি হয়েছে এবং দেশব্যাপী কোটা আন্দোলন নিয়ে একটি ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে কোটা আন্দোলনের আড়ালে রাজনৈতিক যে শক্তি জোগানো সেটির ফলশ্রুতিতে কোটা আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনের দিকে রূপ পরিগ্রহ করে কি না সেটি যেমন দেখার বিষয়, এর ফলে সরকারের জন্য বাড়তি কোন চাপ সৃষ্টি হয় কি না সেটি নিয়েও নানা রকম আলাপ আলোচনা হচ্ছে।’