
অনলাইন ডেস্ক: জাতিসংঘ ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে পরমাণু অস্ত্র নিরোধ বিষয়ক নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি (এনপিটি) থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছে তেহরান। বৃহস্পতিবার টেলিগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি সতর্ক করে বলেন, জাতিসংঘ যদি কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়, তবে ইরান জাতিসংঘের সঙ্গে করা কার্যকর প্রতিশ্রুতি থেকে সরে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে।
গত জুনে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের পর আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তবে তেহরান জানায়, বৈঠক হতে পারে, কিন্তু পরমাণু প্রকল্প সরেজমিনে দেখানোর অনুমতি দেওয়া হবে না। মধ্যস্থতার চেষ্টা চালায় যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি, তবে সেটি ব্যর্থ হয়। বরং তারা অভিযোগ তোলে যে, ইরান ২০১৫ সালের জ্যাকোপা চুক্তি ভঙ্গ করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১২টা থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালে ইরান আইএইএ-এর সঙ্গে এনপিটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এর মাধ্যমে দেশটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কখনও পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি হাতে নেবে না এবং আইএইএকে সহযোগিতা করবে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুতের কারণে ইরানের ওপর সন্দেহ বাড়ছে। আইএইএ গত ৬ জুন জানিয়েছিল, ইরানের কাছে এমন মাত্রার বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে যা দিয়ে সহজেই পরমাণু বোমা তৈরি সম্ভব।
এর এক সপ্তাহ পর, ১৩ জুন রাতে ইরানে বিমান অভিযান চালায় ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দাবি করেন, আইএইএ’র প্রতিবেদনকে ভিত্তি করেই এই হামলা চালানো হয়েছে। ১০ দিন পর যুক্তরাষ্ট্রও সংঘাতে যোগ দেয়। ২৬ জুন যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে জাতিসংঘের সঙ্গে নতুন জটিলতা তৈরি হয়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই অভিযোগ করেন, “ইসরায়েলি হামলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিয়েছে আইএইএ।”