
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে—এমন সম্ভাব্য সময় ধরে প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সমন্বয় করে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিশ্চিতে শুরু হচ্ছে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। এর অংশ হিসেবে তৈরি হচ্ছে নতুন প্রশিক্ষণ কারিকুলাম ও একটি প্রামাণ্যচিত্র।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম জানান, “পুলিশকে নির্বাচন উপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একটি সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে পুলিশ সদস্যদের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে।” এরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতির নির্দেশনা দেওয়া হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি আবু নাসের মো. খালেদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের প্রস্তুত করতে চারটি কমিটি গঠন এবং প্রশিক্ষণ ভিডিও ও কারিকুলাম প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রথম ধাপে পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পরবর্তীতে তারা নিজ নিজ জেলার পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনবেন। প্রশিক্ষণে মক টেস্টেরও ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা, ব্যালট বাক্স পরিবহন ও ভোটার সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ বিষয়ে ধাপে ধাপে দায়িত্ব পালনের অনুশীলন করানো হবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচন ঘিরে নানা বিতর্কের অভিজ্ঞতা থেকে এবার অধিক সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের ‘দিনের ভোট রাতে’ অভিযোগ যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে বিষয়ে আইজিপির কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। বিতর্ক এড়াতে প্রশিক্ষণে বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে।
এছাড়া ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কমিউনিটি পুলিশ ব্যবস্থার মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচির বিষয়টিও গুরুত্ব পাচ্ছে। ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে ইসি ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার পরিকল্পনা করছে পুলিশ।
নির্বাচন সামনে রেখে মাঠে নামছে প্রস্তুত ও প্রশিক্ষিত পুলিশ—যা একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিতের বার্তা দিচ্ছে।