
নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের মাঠে নেতাদের নামার এখনই সময়। মাঠের নেতারা অপেক্ষা করছেন। তারা নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা এখনও পর্যন্ত তারা পাচ্ছেন না। দুই দিন আগেই আওয়ামী লীগের প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতাদেরকে ডাকা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে। সেই সভা পণ্ড হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে প্রাক্তন ছাত্রলীগের নেতারা ভুয়া ভুয়া ধ্বনি দিয়ে বিব্রত করেন। এরপর মাঠের নেতাদেরকে সক্রিয় করার জন্য কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
জুলাই তাণ্ডবে সারাদেশে আওয়ামী লীগের হতশ্রী অবস্থা ফুটে উঠেছে। এর মধ্যে সাংগঠনিক শক্তি জোরদার করা, নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করাটাই অত্যন্ত জরুরি কাজ। এই কথা স্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। আর এজন্যই যারা ত্যাগী, পরীক্ষিত ও রাজপথে আন্দোলন করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তাদেরকে সামনে আনার তাগিদ অনুভব করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই সমস্ত নেতারা মাঠে নামতে পারেননি। তারা নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের যারা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন, তাদের মধ্যে বাহাউদ্দিন নাছিম, মাহবুব উল আলম হানিফের স্বচ্ছ ইমেজ রয়েছে। জনগণের কাছে তাদের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাছে তারা দুজনেই খুবই জনপ্রিয়। তাদেরকে সাংগঠনিক পুনর্গঠনের জন্য দায়িত্ব দেওয়া বা তাদের নেতৃত্বে বিভিন্ন দুর্বল জেলাগুলোতে সংগঠন শক্তিশালী করার দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান মাঠের নেতা। তাদের দীর্ঘ নেটওয়ার্ক রয়েছে। তারা আওয়ামী লীগের ত্যাগী পরীক্ষিত কর্মীদের বাছাই করে একটি শক্তিশালী টিম তৈরি করতে পারে এমন পরামর্শ আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে উঠে আসছে।’
আওয়ামী লীগের যারা সাংগঠনিক সম্পাদক আছেন, তারা প্রত্যেকেই যোগ্য, মেধাবী সম্পন্ন। কিন্তু এই সাংগঠনিক সম্পাদকদেরকে রীতিমতো বসিয়ে রাখা হয়েছে। যেমন, ধরা যাক ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ মহানগরের কমিটি। ঢাকার সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা মির্জা আজম। তিনি প্রথম দলের নীতি নির্ধারকদের জানান যে- ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের কমিটি নিয়ে নানা রকম অনিয়ম হচ্ছে, কমিটি বাণিজ্য হচ্ছে। তার এই জানানোর পর ফারুক খান এবং ড. রাজ্জাককে দুটি মহানগর কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ড. রাজ্জাক দুদিন আগে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে প্রাক্তন ছাত্রলীগের নেতাদের কাছে দুয়োধ্বনি শুনেছেন।’
দেখা যাচ্ছে যে, যারা নেতাকর্মীদের সাথে সম্পৃক্ত নন, যারা হঠাৎ করে বড় হয়েছেন, তাদেরকে বাদ দিয়ে যারা ধাপে ধাপে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব পেয়েছেন; যারা আওয়ামী লীগের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, সবচেয়ে বড় কথা যাদের সাথে আওয়ামী লীগের কর্মীদের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে, এই ধরনের লোকজনকে সামনে আনা দরকার।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের কর্মীরা মনে করছেন, এই সময় আওয়ামী লীগের ৫ নেতাকে অত্যন্ত দরকার। যাদের সার্বক্ষণিক সাংগঠনিক তৎপরতার ফলে আওয়ামী লীগের মধ্যে হতাশা কেটে যেতে পারে এবং দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এই নেতাদের মধ্যে রয়েছেন-জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম এবং এসএম কামাল। এদেরকে সামনে নিয়ে এলে এবং এদেরকে সংগঠন গোছানোর সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দিলে সে তারা সফল হবে বলে অনেকে মনে করেন। বিশেষ করে অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলো সঠিক পথে আনা টা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টরা।’