নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপায় নিম্নমানের কাগজ ব্যবহার ও দরপত্রে অনিয়মের মাধ্যমে শত কোটি টাকা লোপাট করেছে একাধিক প্রকাশক। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)-এর তদন্তে এসব অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রভাবশালী প্রেস মালিকদের একটি চক্র প্রথমে দরপত্রে নির্ধারিত মান বাদ দিয়ে নিজেদের সুবিধাজনক মেশিনের মাপ যুক্ত করতে সংশোধনী আনায়। এনসিটিবি ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের আর্থিকভাবে প্রভাবিত করে সংশ্লিষ্ট শর্ত পরিবর্তন করা হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে নিম্নমানের বই।
এনসিটিবির ৩২টি টিম ৬৪ জেলায় গিয়ে ৪০ কোটি বইয়ের মধ্যে ১৩ কোটিই নিম্নমানের বলে শনাক্ত করে। এসব বইয়ের কাগজের জিএসএম, ঔজ্জ্বল্য ও বাঁধাই ছিল মানহীন। হাই-টেক সার্ভে অ্যান্ড ইন্সপেকশন সার্ভিসের রিপোর্টেও ৩০ শতাংশ বই নিম্নমানের প্রমাণিত হয়।
লেটার এন কালার লি., অনুপম প্রিন্টার্স, অক্সফোর্ড প্রেস, দ্য গুডলাকসহ অন্তত ১০টি প্রতিষ্ঠান কাগজের নির্ধারিত মান লঙ্ঘন করে ৬০-৭০ জিএসএমের নিম্নমানের কাগজ ব্যবহার করে বই সরবরাহ করে। এর মধ্যে রব্বানি জব্বারের আনন্দ প্রিন্টার্স অন্যতম, যার বই মানহীন হওয়ায় ২০ হাজার কপি বাতিল করে এনসিটিবি।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী জানান, ১৬টি প্রতিষ্ঠানের বই ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করলে তাদের ২০ শতাংশ অর্থ কেটে নেওয়া হবে।
তবে সবকিছুর পরও ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য আবারও সংশোধিত মেশিন শর্তে দরপত্র আহ্বান করেছে এনসিটিবি, যেখানে বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট মহল আশঙ্কা করছে, আগের মতোই দুর্নীতি আবারও পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.