নজরুল ইসলাম: সিরাজগঞ্জ সালেহা ইসহাক সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষান্মাসিক পরীক্ষার খাতার মান নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত খাতাগুলোর কাগজ পাতলা, অস্বচ্ছ ও ছাপার মান ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের। এতে করে শিক্ষার্থীরা লেখার সময় চরম অসুবিধায় পড়েন।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা সরাসরি কক্ষে দায়িত্বে থাকা শ্রেণিশিক্ষকদের বিষয়টি জানায়। পরবর্তীতে এক শিক্ষক সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফছার আলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। খাতার নিম্নমান নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করলে তিনি প্রথমে অস্বস্তিতে এবং তোপের মুখে পড়েন। অবশেষে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফছার আলী পরবর্তী পরীক্ষায় ৪৫ গ্রাম কাগজের বদলে উন্নত মানের ৫৫ গ্রাম কাগজ ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। বিষয়টি যেন এখানেই শেষ হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, সভায় সরাসরি প্রতিবাদ করায় ওই শিক্ষককে হেয় প্রতিপন্ন করতে স্কুলের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন মহলে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অপপ্রচারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এতে শিক্ষক সমাজের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
প্রতিবাদকারী শিক্ষকগণ বলেন, আমরা কেবল বিদ্যালয়ের উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণ চেয়েই বিষয়টি সভায় উত্থাপন করেছিলাম। কিন্তু এখন আমাদের উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অপমান করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর সংবাদ মাধ্যমে যে কোচিং বাণিজ্যের কথা বলা হয়েছে সিরাজগঞ্জে ওই নামে কোন কোচিং নেই। আমরা এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জোরালো হস্তক্ষেপ কামনা করছি। বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও সচেতন মহলও এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছেন এবং শিক্ষককে হয়রানি না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের এই ন্যায্য প্রতিবাদকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিছু প্রভাবশালী মহল কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে তাদের হেয় করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। তাঁরা আরও বলেন, আমরা খাতার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি, কারণ এতে সঠিকভাবে লেখা যায় না, সহজে ছিঁড়ে যায়।
স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ও অভিভাবকরাও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, “পরীক্ষা একটি সংবেদনশীল বিষয়। সেখানে খাতার মান প্রশ্নবিদ্ধ হলে শিক্ষার্থীদের মনোবল নষ্ট হয়। এটা শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, গোটা শিক্ষাব্যবস্থার জন্যই অশনিসংকেত। এছাড়া কমিটিবিহীন পরীক্ষার ফি আগের চাইতে ১’শ টাকা বৃদ্ধি হওয়ায় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং নিম্নমানের খাতা সরবরাহের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনার তাঁরা দাবি জানান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফছার আলী বলেন, সবকিছুর দাম বৃদ্ধি হওয়ায় পরীক্ষার ফি বাড়ানো হয়েছে। আর খাতার বিষয়ে অন্যান্য বারের মতোই এবারেও একই ধরনের পরীক্ষার কাগজ এনেছিলাম। নিম্নমানের প্রশ্ন উঠায় তা বদলিয়ে ভালো মানের কাগজ এনে পরীক্ষা সমাপ্ত করা হয়েছে।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.